করোনার কারণে প্রায় দুই বছর কর্মবিমুখ ছিল কুষ্টিয়ার দর্জি পল্লীর কারিগররা। দীর্ঘদিন পর কর্মে ফেরায় বেড়েছে কাজের চাপ। নিজের পছন্দ অনুযায়ী ঈদের মানানসই পোশাকটি বানাতে দর্জি পল্লীতে ভিড় করেন ক্রেতারা। তাই ঈদের একমাস আগ থেকেই দর্জি পল্লীর কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুনে। আবার সময়মত সরবরাহ করতে না পারার ভয়ে ঈদের পনের দিন আগে থেকে ক্রেতাদের অর্ডার বন্ধ করে দেন দর্জিরা। রাত-দিন সেলাই মেশিনের আওয়াজে মুখর এখন কুষ্টিয়া শহরসহ বিভিন্ন এলাকার দর্জি পল্লীগুলো। চলছে পোশাক কাটা সেলাইয়ের কাজ। রোজার প্রথম থেকে ব্যস্ততা শুরু হলেও এখন যেন তাদের ব্যস্ততার শেষ নেই। রাতদিন চলছে ক্রেতাদের অর্ডার ও সরবরাহের কাজ। দীর্ঘদিন পর কাজে ফিরতে পরে খুশি কারিগররাও। কুষ্টিয়া শহরের বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, ইব্রাহিম প্লাজা এলাকাসহ বিভিন্ন বাজারের দর্জি কারিগররা ব্যস্ততা সময় পার করছে। ইব্রাহিম প্লাজার শিল্পী টেইলার্সের মালিক কিরন মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে দুই বছর কাজ ছিল না বললেই চলে। এ বছর কাজের অর্ডার একটু বেশি পাচ্ছি। এবছর কাজ করতে পেরে বেশ খুশি। আবার ক্রেতাদের অভিমত সারা বছরই তো রেডিমেড পোশাক কেনা হয়, বছরের একটিমাত্র দিনে পছন্দের পোশাকটি বানাতে তাই দর্জির দোকানে ভিড় তাদের। এমন কথা জানালেন শামীমা আক্তার নামে এক ক্রেতা। এদিকে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় ২০ রোজার পর থেকে কুষ্টিয়ার অধিকাংশ দর্জির দোকানে অর্ডার নেয়া বন্ধ। কাপড়ের মূল্য বৃদ্ধি ও চাহিদা বেশি থাকায় পারিশ্রমিকও বেড়েছে তাদের। বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটের জুথি টেইলার্সের আবদুল খলেক জানান, দু’বছরের অলস সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রাতদিন সমানে কাজ চলছে। কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় কারিগরদের মজুরিও বেড়েছে। সূর্যমুখী টেইলার্সের মালিক খান শামীম বলেন, কাজের চাপ বেড়েছে। নারীদের পোষাক তৈরি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আপাতত অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। ঈদের আগেই সব ক্রেতাদের অর্ডারের পোশাকটি সরবরাহ করতে হবে। তাই দিনরাত সমানে চলছে দর্জিদের সেলাই মেশিন। নতুন পোশাক পরে ঈদের আনন্দ যেমন হবে ভাগাভাগি, তেমনি ঈদের পোশাকটি সরবরাহ করতে পেরেই ঈদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ কারিগরদেরও। আর এটাই হলো সবার জন্য খুশির ঈদ।