বিএনপি বাংলাদেশে থাকলেও তাদের অন্তরে পাকিস্তান রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আপনারা (বিএনপি) চাইলে পাকিস্তানে চলে যান। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
রোববার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আমরা জানি আপনারা বাংলাদেশে থাকলেও আপনাদের দিলের মধ্যে আছে পাকিস্তান। আপনারা বলেন ‘টেকব্যাক বাংলাদেশ’। আমি আপনাদের বলব ‘টেকব্যাক বাংলাদেশ’ নয় আপনারা চাইলে ‘গো ব্যাক পাকিস্তান’। পাকিস্তানে চলে যান, আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না, দেশের কোনো আপত্তি থাকবে না।
তিনি বলেন, এ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার জন্য আবার যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন তাহলে আপনাদের পাকিস্তানেই চলে যেতে হবে। এর বাইরে আপনারা আর কোনো সুযোগ পাবেন না।
হানিফ বলেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করে একাত্তরে যারা মানুষ হত্যা করেছিল তাদের দোসর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশকে জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানিয়ে দেবে। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের দেশ নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেবে না।
বিএনপি দেশের মানুষকে বর্হিবিশ্বে ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে পরিচয় করিয়েছিল উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির কী অর্জন তা মানুষ জানে। ১৯৯৫ সালে কৃষকদের মূল দাবি ছিল সার। বিএনপি নেতাদের গোডাউন ভরা সার ছিল, কিন্তু কৃষক বাজারে সার পায়নি। কৃষকরা সারের দাবিতে গিয়েছিল আর আপনারা সারের বদলে তাদের গুলি উপহার দিয়েছিলেন।
বিএনপি সে সময় ১৮ জন কৃষককে হত্যা করেছিল অভিযোগ করে হানিফ বলেন, কৃষি খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন আপনারা। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর কৃষি খাতে বিপর্যয় দেশের মানুষ দেখেছে। ৪০ থেকে ৬০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি ছিল। খাদ্য কেনা সম্ভব ছিল না, রিলিফ আনতে হতো। আপনাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে জাতির কপালে ‘ভিক্ষুকের জাতি’র কলঙ্ক লেগেছিল।
হানিফের প্রশ্ন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ কোন অবস্থায় ছিল? কোন কোন খাতে কী উন্নয়ন করেছেন আপনারা? দয়া করে জানান, দেশবাসী জানুক। আমরা বহুবার জানতে চেয়েছি, বলতে পারেননি। আপনাদের সময়ে ৩১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল। মানুষের ঘরে সংযোগ ছিল, কিন্তু বিদ্যুৎ ছিল না।
বিএনপি সরকারের উন্নয়ন দেখে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বললেন- দেশের রিজার্ভ শেষ হয়ে যাচ্ছে, দেশ সংকটের মাঝে। দেশের রিজার্ভ বর্তমানে ৩৯ বিলিয়ন ডলার আছে। আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। আপনাদের সময়ে রিজার্ভ ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। তখন দেশ ধ্বংস হয়নি আর এখন ধ্বংস হচ্ছে। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকা দরকার। কিন্তু বিএনপির মাঝে সেই দেশপ্রেম নেই বলে মিথ্যাচার করে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ।