সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকে। তবে, এবার শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের আগমন হলেও এখনও কমেনি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। দিন দিন দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এ বছর নভেম্বর পুরাটাও ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। চিকিৎসকরা রোগীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, রাজধানীর বাইরের বেশিরভাগ রোগীই ঢাকা ফেরত। তবে রাজধানীর বাইরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অপরিবর্তিত হলেও এখনও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ১৫ জন। তারমধ্যে, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এছাড়া, রোগীর চাপ বেশি থাকায় বারান্দায় মশারি টানিয়ে দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা। সুস্থ হয়ে উঠছেন অনেকেই।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জেলায় এখন পর্যন্ত ৭শ’ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলেও বর্তমানে ৫টি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৪ জন। তারমধ্যে, সবশেষ ১৪ জন নতুন রোগী।
কিশোরগঞ্জে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৪ জন। আর সর্বশেষ নতুন করে আক্রান্ত ৮। আক্রান্তরা জানান, ঢাকা থেকে জ্বর, সর্দি নিয়ে বাড়ি ফিরলে হাসপাতালে পরীক্ষার পর ধরা পড়ে ডেঙ্গু।
তবে, বরিশালের পরিস্থিতি ভিন্ন। জেলায় বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও ২০ রোগী ভর্তি একদিনে। চিকিৎসাধীন ৬৪ জন। বেশিরভাগ রোগীই ঢাকা ফেরত বলে জানান চিকিৎসক। পাশাপাশি, সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ চিকিৎসকের।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. শাহরিয়ার হক সময় সংবাদকে বলেন, বর্তমানে আমাদের বেশির ভাগ রোগীই ঢাকা থেকে আগত। সচেতনতাই ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার এবং প্রতিকারের একমাত্র ব্যবস্থা।
এদিকে, পিরোজপুর ও কিশোরগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। গত একদিনে পিরোজপুরে ১৩ জন ও কিশোরগঞ্জে ৮ জন চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সর্বমোট ৪৩ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪০ হাজার ৫৩৫ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। এ বছর ২১ জুন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।