1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট আটকে আছে ঘাট আধুনিকায়ন, ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ | Bastob Chitro24
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট আটকে আছে ঘাট আধুনিকায়ন, ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২২

পদ্মায় ভাঙন শুরু

পদ্মা-যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে তীব্র স্রোত ও ঝড়ো বাতাসের তোড়ে এবার আগেভাগেই শুরু হয়েছে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙন। অথচ দৌলতদিয়াকে আধুনিক নৌবন্দরে উন্নীতকরণের বড় কাজের জন্য অন্যান্য বছরের মতো এবার আপৎকালীন কোনো কাজও হচ্ছে না ভাঙনরোধে। ফলে আবারও ভয়াবহ ভাঙনের মুখে পড়তে চলেছে এখানকার লঞ্চ, ফেরিঘাটগুলো ও আশপাশের জনপদ।

ফাইল চালাচালি ও বুয়েটের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আটকে আছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌবন্দরের আধুনিকায়ন প্রকল্পের কাজ। এ কাজের অপেক্ষায় ভাঙন প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ না নিলেও এখন আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের মানুষের।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। এ নৌ-রুটের দৌলতদিয়ায় ৪ কিলোমিটার ও পাটুরিয়ায় ২ কিলোমিটার স্থায়ীভাবে আধুনিকায়ন করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ৬৮০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। কাজটি বাস্তবায়নের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে না পারা ও কাজের নির্মাণসামগ্রীর ঊর্ধ্বগতির কারণে এ কাজের বর্তমান ব্যয় বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ১২শ কোটি টাকা।

সরেজমিন দেখা যায়, নতুন করে লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পদ্মাপারের মানুষ। ভাঙন ঝুঁকিতে আড়াই শতাধিক বসতবাড়িসহ দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, টার্মিনাল, বাজার, খানকাপাক দরবার শরীফসহ বহু স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা বিলাস বেপারি জানান, তিনি এর আগে দুবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবারও ভাঙন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই আগেভাবেই ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে নিরাপদ কোথাও চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আরও অনেকেই এভাবে সরে যাচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে চোখে দেখে কাজ করলে সেটা টেকসই হয়। কিন্তু এখানে তা করা হয় না।

কয়েকজন এলাকাবাসী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, প্রতি বছরই মাপজোক হয়, কিন্তু হয় না কাজ। গত চার বছর ধরে স্থায়ী কাজ হবে শোনা যাচ্ছে কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তাদের স্বার্থ হাসিলে পানি বৃদ্ধির সময় সামান্য জিও ব্যাগ ফেলে। সারা বছর তাদের আর কোনো খোঁজ থাকে না। যে কারণে প্রতিবছর ভাঙনের কবলে পড়ে দৌলতদিয়া ঘাট।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, বিগত কয়েক বছরে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কারণে আমাদের দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন দুটির বিস্তীর্ণ এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভূমিহীন হয়েছে হাজারও মানুষ। লঞ্চ ও ফেরিঘাটগুলোও ভাঙনের শিকার হয়েছে বেশ কয়েকবার। ভাঙন ঠেকাতে জরুরিভিত্তিতে কিছু কাজ করা হয় প্রতিবছর। কিন্তু এতে সরকারের কোটি কোটি টাকাই জলে যায়। তেমন কোনো কাজে লাগে না। আমরা দ্রুত ঘাট ও সংলগ্ন এলাকাকে স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের ৪ কিলোমিটার এলাকার জন্য ৫১০ কোটি টাকা এবং পাটুরিয়া ঘাটের ২ কিলোমিটার এলাকার জন্য ১৭০ কোটি টাকাসহ ৬৮০ কোটি টাকা পাশ হয়েছে গত বছরের জানুয়ারিতে। কিন্তু নকশা পরিবর্তনের কারণে নতুন করে সাড়ে ১২শ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। যা বুয়েটে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তিনি বলেন, এ বছরেও আগামী বন্যায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে, তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয় বলে তিনিও মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি