1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
তৈরি পোশাকের দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশি রফতানিকারকরা | Bastob Chitro24
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন

তৈরি পোশাকের দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশি রফতানিকারকরা

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২

চলমান বিশ্বমন্দায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ আনতে ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশকে কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে। জাহাজ ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় প্রতিযোগী দেশগুলো বায়ারদের কাছে একেবারে নামমাত্র মূল্যের ‘কস্ট ম্যানেজমেন্ট’ দাখিল করছে। এতে লড়াইয়ে টিকে থাকতে প্রতিটি পোশাক আইটেমের দাম এক থেকে দশ ডলার পর্যন্ত কমাতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশি রফতানিকারকরা।

এমনিতেই নানা জটিলতায় বিদেশি বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের ক্রয়াদেশ হয় স্থগিত করছে, আর না হয় শিপমেন্ট বাতিল করছে। এ অবস্থায় ভোগান্তি এড়াতে এখন খোদ মালিকরা কারখানায় এসে উৎপাদন প্রক্রিয়া তদারকি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মূলত বায়ারদের কোনো রকম অস্বস্তিতে না ফেলতেই গার্মেন্টস মালিকদের এই বাড়তি মনোযোগ।

এদিকে প্রতিযোগী দেশ হিসেবে পরিচিত ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার বিপরীতে বায়ারদের কাছ থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ আনতে দামও কমাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আগে প্রতিটি জ্যাকেটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গার্মেন্টস মালিকরা কস্ট ম্যানেজমেন্ট আদায় করতেন ৩৫ মার্কিন ডলার, আর ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া পেত ৩৮ মার্কিন ডলার। জগিং প্যান্টে বাংলাদেশ সাড়ে ১০ মার্কিন ডলার পেলেও প্রতিযোগী দেশগুলো ১২ মার্কিন ডলার আদায় করত। এ ছাড়া বেবি সেটে বাংলাদেশ পেত ৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার, যেখানে ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া পেত ৪ মার্কিন ডলার।

এখন ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া জ্যাকেটে ২৫ ডলার, জগিং প্যান্টে মাত্র ৮ মার্কিন ডলার এবং বেবি সেটে ৩ ডলার দাবি করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশি গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা লড়াইয়ে ঠিকে থাকতে দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক প্রথম সহসভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, যে অল্প-স্বল্প ক্রয়াদেশ আসছে, সেগুলো আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া এমনকি চীন আমাদের থেকেও কম দামে নিয়ে নিচ্ছে। আমরাও যেখানে খবর পাচ্ছি, আমরাও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।

অর্থনৈতিক সংকটের মুখে বিদেশি বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আবার ফোর্স লোন পরিশোধ, অর্ডার স্থগিত হওয়া মালামাল বন্ডেড ওয়্যার হাউসে রাখা নিয়ে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মতবিরোধ চলছে। এ ক্ষেত্রে সংকট কাটিয়ে উঠতে ছয় মাস সব ধরনের নিয়মনীতির শিথিলতা চেয়েছে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

অর্ডার স্থগিত হওয়া মালামাল বন্ডেড ওয়্যার হাউসে রাখার প্রসঙ্গে বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এনবিআরকে আমাদের এ জায়গায় একটু সহনশীলতা দেখাতে হবে। আমাদের পণ্যগুলো সঠিকভাবে রাখতে দেয়ার ক্ষণস্থায়ী অনুমতি দিতে হবে তাদের। এখানে তাদের তদারকি কার্যক্রম নিয়ে আমাদের সমস্যা নেই।’

বিজিএমইএ-র সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘সরকার যদি এ মুহূর্তের আমাদের নীতিগত সহায়তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তাগুলো যেমন: ব্যাক টু ব্যাক পেমেন্টের সুবিধা না দেয়, তাহলে আমাদের এ ব্যবসা ভবিষ্যতে কী হবে, আমরা নিজেরাও বুঝে ‍উঠতে পারছি না ‘

অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী বর্তমানে কনটেইনারবাহী জাহাজের ভাড়া একেবারেই নিম্নমুখী। আর দূরত্ব কম হওয়ার কারণে তার সুযোগ নিচ্ছে প্রতিযোগী দেশগুলো। আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী, তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে জাহাজ ভাড়া বায়ার প্রতিষ্ঠান বহন করে। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, জাহাজ ভাড়া কমে যাওয়ায় পোশাক খাতের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ৩ হাজার ৫৮০ কোটি মার্কিন ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ভিয়েতনাম ৩ হাজার ১০৮ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি