এ বছর ডায়রিয়ায় দেশে চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে আইসিডিডিআর,বি’ বলছে মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। দেশের বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর। গতকাল ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব এবং মুখে খাওয়ার কলেরা ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন নিয়ে ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
তিনি জানান, চলতি বছরে রাজধানী ঢাকায় ২৩ লাখ মানুষকে কলেরার টিকা দেয়া হবে। এক বছর বয়স হতে বড় সকল বয়সের মানুষ কলেরার টিকা পাবেন। শুধু গর্ভবতী নারীরা পাবেন না। রাজধানীর পাঁচটি স্থানে কলেরার টিকা দেয়া হবে। যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও সবুজবাগে।
মে মাসে প্রথম ডোজ দেয়া হবে এবং জুন মাসে দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ। টিকার সংকটে এক সঙ্গে সারা দেশে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, এবছর আমরা চারটি মৃত্যুর রিপোর্ট করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র জানান, রাজধানী ঢাকায় ২৩ লাখ মানুষকে কলেরার টিকা দেয়া হবে। একবছর বয়স হতে বড় সকল বয়সের মানুষ কলেরার টিকা পাবেন। শুধু গর্ভবতী নারীরা পাবেন না।
মে মাসে প্রথম ডোজ দেয়া হবে এবং জুন মাসে দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ। সারা দেশে কেন দেয়া হবে না- এমন প্রশ্নে বলেন, টিকার এখন খুব সংকট। নাইজেরিয়া থেকে টিকা কেটে আমাদের দেয়া হয়েছে। রাজধানী ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী যাত্রাবাড়ী এলাকায়। যাত্রাবাড়ীতে এত বেশি কেন? নাজমুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ পানির কারণে। সাপ্লাই লাইনে কিন্তু সমস্যা আছে। পানির সমস্যা সমাধান না হলে এটা থেকেই যাবে। যে পানি আমি ব্যবহার করবো, তা নিজ দায়িত্বে নিরাপদ করে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হয়। তবে আইসিডিডিআর,বি’ বলছে মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। এ প্রসঙ্গে নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা এ পর্যন্ত চারটি মৃত্যুর তথ্য পেয়েছি। আইসিডিডিআর,বি’ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। তারা আমাদের কাছে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সেই তথ্য হস্তান্তর করেনি। করলে আমরা সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখবো।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মার্চ মাসে দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, মার্চে সারা দেশে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে শুধু ঢাকায় ৩৬ হাজার ৯১২ জন। বিভাগভিত্তিক হিসেবে-ঢাকা বিভাগে ৬৬ হাজার ৪৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ হাজার ৪১৬ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬ হাজার ২০৯ জন, বরিশালে ৫ হাজার ৪১৫ জন, সিলেটে ১১ হাজার ১৯৩ জন, রাজশাহীতে ১২ হাজার ৪৮৪ জন, রংপুরে ১০ হাজার ৫৬৫ জন, ময়মনসিংহে ৯ হাজার ৯০৯ জন। অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, গত ৮ থেকে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত হাসপাতালে সবচেয়ে রোগী এসেছে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে- ১১৫০ জনের মতো। এরপর মীরপুর; ৫৫০, তারপর পর্যায়ক্রমে দক্ষিণখান; ৫০০ জন, বাড্ডা; ৩০০ জন, মোহাম্মদপুর; ২৫০ জন, কদমতলি; ২৫০, মতিঝিল; ১৫০, ডেমরা; ১৫০, পল্লবী; ১৫০, শ্যামপুর; ১৫০, আদাবর; ১৫০, আশুলিয়া ১০০ জন। এ ছাড়া রমনা, লালবাগ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, সবুজবাগ, খিলগাঁও, কাফরুল এলাকা থেকে অন্তত ৫০ করে রোগী এসেছে। গত ৮ থেকে ১৫ই মার্চ ঢাকার বাইরে আশপাশ এলাকা থেকেও ও ঢাকার হাসপাতালে রোগী এসেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন অন্তত ৪০০ জন। সবচেয়ে বেশি এসেছে টঙ্গী থেকে অন্তত ২৫০ জন। জয়দেবপুর ও নরসিংদী থেকে ১০০ জন করে। কেরানীগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, শিবপুর, শ্রীপুর, কাপাশিয়া, কালিয়াকৈর, মনোহরদী, মানিকগঞ্জ, লৌহজং, গজারিয়া থেকে এসেছে অন্তত ৫০ জন করে।