ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে শিক্ষিকার দেয়া হুমকির অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রোববার এ অডিও ভাইরাল হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষিকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা। এর আগে গত ২৬ আগস্ট হুমকির ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট খালেদা জিয়া হলের আবাসন প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারী ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নেয় হল প্রশাসন। এ সময় বোরকা পরিহিতা এক ছাত্রীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার পরিচিত ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে তাকে হেনস্তা না করার অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে ভুক্তভোগীকে আবারো ডাকেন মাহবুবা সিদ্দিকা। প্রভোস্টের কার্যালয়ে গেলে তাকে নানাভাবে হেনস্তা করেন ও হুমকি দেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষিকা। এতে শঙ্কিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। এদিকে শনিবার হলের আবাসিক শিক্ষক ও হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হুদাকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষিকা নাহিদা আক্তার ও মেহেদী হাসান। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো লিখিত নির্দেশনা হাতে পাননি বলেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সার্চ কমিটির আহবায়ক। এদিকে রোববার ওই ছাত্রীকে শিক্ষিকার দেয়া হুমকির অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অডিওতে অভিযুক্ত মাহবুবা সিদ্দিকা ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। চেনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চেনো? বইল্লা ওইখানে তোমারে পুইত্তা দিমুনে (দিব)। এলাকায়ও টিকতে পারবা না।’ অডিও ভাইরাল হওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শহিদুল হক নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে বলেন, এ রকম মানসিকতার গুরুজন যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করেন তাহলে শিক্ষাব্যবস্থারই মান কেমন হবে? আশরাফুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এ রকম আরো অনেক শিক্ষক আছে যাদের কাছে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ না। যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া হলে এসব বন্ধ করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা ভুল করলে শিক্ষকরা তাকে শাসন করতে পারে কিন্তু হুমকি দেয়া ঠিক হয়নি।