গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এ বছর এডিস মশার ঘনত্ব বেশি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বৃষ্টি শুরু হলে এই ঘনত্ব আরও বাড়বে। এতে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগগুলো আরও মারাত্মক আকারে দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। এই মুহূর্তে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের জোরালো অভিযান দরকার বলেও মনে করে অধিদফতর। এ কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও হাতে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পরিচালিত ১০ দিনব্যাপী উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি সাইটে কীটতাত্ত্বিক জরিপের নবম দিন শেষ হয়েছে শনিবার (২ এপ্রিল)। জরিপে ২১ জন কীটতত্ত্ববিদের সম্মন্বয়ে গঠিত দল এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫২০টি বাড়ি পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে ১১৪টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। বাড়িতে লার্ভা শনাক্তের হার ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। এই সার্ভের একটি দল পরিণত মশা ধরার কাজও করছে। এতে করে ঢাকায় কত ধরনের মশা আছে সেটাও জানা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এছাড়া মশার মধ্যে অন্য কোনও জীবাণু আছে কিনা তাও জানা যাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানিয়েছে, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার গবেষণা শেষে মশার ঘনত্ব দিয়ে জিআইএস ম্যাপিং করা হবে। এতে ঢাকার কোন কোন এলাকায় মশার ঘনত্ব বেশি সেটা জানা যাবে। বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, গত শতাব্দীতে জয়বায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি বৃষ্টির ধরনও বদলেছে। এসব কারণে আগামী দিনগুলোতে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়বে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ প্রতিরোধ করা তখন কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে সংশ্লিষ্ট সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ও বাড়াতে হবে। শনিবার সকালে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডে এডিস সার্ভের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও লাইন ডিইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. ইকরামুল হক এবং অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।