বিভিন্ন সময় দেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন স্বজনেরা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে মনোযোগ দিলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ পাওয়া যাবে।
শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এ আকুতি জানান। মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এ সময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের দাবির প্রতি সংহতি জানাতে উপস্থিত হন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমরা যখন গুম হওয়া থেকে বেঁচে যাওয়া ভিকটিমদের কথা শুনি, তখন আমরা শিউরে উঠি কিন্তু অবাক হই না। অনলাইনে মানুষজন বিশ্বাস করে সরকারই এগুলো করেন। আপনাদের (সরকার) কাছে প্রশ্ন হচ্ছে- যদি আপনারা গুম না করেন তাহলে এগুলোর সুরাহা কেন করছেন না। তাই আমাদের দাবি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর সত্য বের করতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মায়ের পাশে দাঁড়ানো সবার জন্য নৈতিক দায়িত্ব। অত্যাচার করে কিছুদিন থাকা যায় সবসময় থাকা যায় না। বিশ্বে অন্যান্য দেশে যতই খারাপ হোক সেখানের বন্দিদের সংখ্যা বলা হয়। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের শত শত মানুষ হারিয়ে গেছে কোনো খোজ নেই।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা এই হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর জবাব চাই। এখানে যারা তাদের স্বজনদের জন্য কান্না করছেন আমি স্পষ্ট করে বলছি- এদের কাছে ফরিয়াদ করে কোনো লাভ হবে না। এরা এক কান দিয়ে শুনবে আরেক কান দিয়ে বের করে দেবে, স্বজন ফিরে পাবেন না। বাংলাদেশে এখন যে দুঃসময়, গত ৫২ বছরে স্বপ্নেও আসেনি।
স্বজনদের উদ্দেশে মান্না বলেন, আপনাদের পক্ষে জাতিসংঘ সমর্থন করছে, সারাবিশ্ব সমর্থন করছে, আপনাদের পক্ষে যাদের বিবেক আছে তারা সমর্থন করছে। আমি প্রত্যাশা করবো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য করবো।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণত সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা রাষ্ট্র গঠন করেছিলাম যে রাষ্ট্র মানুষকে নিরাপত্তা দেবে, তাদের হেফাজত করবে রাষ্ট্র নাগরিকদের জন্য সংবেদনশীল থাকবে। আজকে রাষ্ট্র যেভাবে সন্ত্রাসী ভূমিকায় আবির্ভাব হয়, রাষ্ট্র যেখানে নাগরিকদের প্রতিদিন গুম করে খুন করে, নির্যাতন করে সেই রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের কোনে সম্পর্ক থাকতে পারে না। এই রাষ্ট্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর প্রমুখ।