প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর এলাকার পশ্চিম-উত্তর পাশের সড়ক ফের দেবে গেছে। দেবে গিয়ে মহাসড়কের বেশ কয়েকটা স্থানে প্রায় দুই থেকে তিনশ মিটার লম্বা সরু অনেকটা খালের মতো আকৃতি সৃষ্টি হয়েছে। দেবে যাওয়া অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই এসব জায়গায় পানি জমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। ভুুক্তভোগী ও স্থানীয়রা বলছেন, বছর পার না হতেই আবারও দেবে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি। এতে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে মহাসড়কটির বেহাল অবস্থা চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, গোলচত্বর সংলগ্ন পশ্চিম-উত্তর পাশের সড়ক দেবে কয়েকটি সরু খাল ও ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে আছে। ক্ষত সৃষ্টি হওয়া সড়কের পাশের নিচ দিয়ে একদিকে কাত হয়ে যানবাহন চলাচল করছে। ঝাঁকুনি খেতে খেতে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও বাইকেল চলছে। এ অবস্থায় যানবাহন উল্টে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গ কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়কটি দিয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন প্রকারের ছোট-বড় যানবাহন ও মানুষ চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ড এলাকাটি উপজেলার মধ্যভাগে অবস্থিত হওয়ায় সব যানবহন ও মানুষ এই স্থান দিয়েই প্রয়োজনীয় স্থানে চলাচল করেন। স্থানীয়রা আরও জানান, সড়ক নির্মাণের কয়েক মাস পরেই গোলচত্বর এলাকায় খানাখন্দ তৈরি হয়। পরে তা সংস্কার করা হয়। এরপর ২০২১ সালের জুন মাসে পুনরায় খানাখন্দের সৃষ্টি হলে ওই বছরের ২০ জুন দেবে যাওয়া অংশে সংস্কার করা হয়। এরপর বছর পার না হতেই ওই একই স্থানে ফের খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ট্রাকচালক আকমল উদ্দিন বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে পণ্য নিয়ে দু-একদিন পর পর ঢাকায় যেতে হয়। বেশ কয়েকদিন হলো সড়ক দেবে গিয়ে খালের মতো আকার ধারণ করেছে। মালামাল নিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় তীব্র ঝাঁকুনি হয়। এতে চালক-যাত্রী সবাইকেই ভোগান্তি পৌহাতে হয়। সড়কটি দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই যানবহন বিকল হচ্ছে। এ বিষয়ে কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম রফিক বলেন, ‘গোলচত্বর এলাকাটি এখন অনেকটাই মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বারবার কেন একই স্থানের সড়ক দেবে যাচ্ছে, তার কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। এবার একই স্থানে আরও বেশি গর্ত হয়েছে।’ কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ (সওজ) সূত্র জানায়, প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের ঠিকাদার মেহেরপুরের জহুরুল ইসলাম কনস্ট্রাকশন। সে সময় সড়ক দেবে যাওয়ায় ২০২০ সালের ২০ জুন সংস্কার কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম বলেন, দেবে যাওয়ার কারণে কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর এলাকায় গতবছর সংস্করণ করা হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় দেবে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আবারও দেবে থাকলে সেখানে স্থায়ী সমাধানের জন্য ঢালাই দিয়ে সংস্কার কাজ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। সরেজমিন সড়কটির দেবে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করে এ বিষয়ে শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এই প্রকৌশলী।