প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারও কাছে কোনোদিন মাথানত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে বাবার কাছ থেকে এটি শিখছি যে- কারও কাছে, কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না।
গতকাল শনিবার দুপুরে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে শনিবার দুপুর পৌনে ১২টায় শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতারা, পরে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), তাঁতী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ এবং গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তারা তাকে শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণই হলো আমাদের শক্তি। বিএনপির ক্ষেত্রে তাদের জন্মই হল আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি না। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগকে সবসময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি পরিবার থেকে বাবার কাছ থেকে এটা শিখছি যে কারও কাছে কোন অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না। দেশে ফেরার পর ৮৩ সালে আমাকে অ্যারেস্ট করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনও মাথা নত করিনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলন ও চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। মাত্র ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়, এটিই আওয়ামী লীগ। যে কোনো সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঠিক থাকেন। এটি বাবার সময়েও দেখেছি।’
‘এক/এগারো’-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্ববধায়ক সরকারের সময়ে নিজের কারান্তরীণ সময়ের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যতবার গ্রেফতার হয়েছি, ততবারই নেতার্কমীদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছি; চিঠির মাধ্যেমে নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দিয়েছি, দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের জেনারেল (সাধারণ) নেতাকর্মীরা সবসময় ঠিক থাকে- এটা বাবার সময়ও দেখেছি।’ সেসময় আন্দোলন ও চাপে বাধ্য হয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে মুক্তি দেয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর প্রথমবার দেশে ফিরে আসার সময়ের বর্ণনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে ফেরার পর ৮৩ সালে অ্যারেস্ট করা হয়, ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। কারও কাছে কোনোদিন মাথানত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে, বাবার কাছ থেকে এটা শিখেছি যে- কারও কাছে, কোনও অন্যায়ের কাছে মাথানত করবো না।’
‘আওয়ামী লীগকে সবসময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে’, বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন ও চাপে বাধ্য হয় আমাকে মুক্তি দিতে। সে সময়ের সরকার অবাক হয় যে, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ সই সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ, জনগণই হলো আমাদের শক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে। যতবার গ্রেফতার হয়েছি, ততবারই নেতাকর্মীদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছি, দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। চিঠির মাধ্যমে তাদের নিদের্শনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা সবসময় ঠিক থাকে। এটা বাবার সময়ও দেখেছি। জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাবো, দল কীভাবে চালাবো সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করবো, সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি।
‘দেশে ফেরার পর ‘৮৩ সালে গ্রেফতার করা হয়। ডিজিএফআইয়ের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নানা সময়ই গ্রেফতার হতে হয়েছে। তবে কারও কাছে কোনো দিন মাথা নত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার ও বাবার কাছ থেকে এটা শিখেছি যে, কারও কাছে বা কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না।’
‘আমরা এখন সরকারে। জনমানুষের কল্যাণ আমরা বুঝি, সেটাই করে যাচ্ছি। আজ প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। মানুষ শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে সঠিকভাবে। আমরা একটি বাজেট দিয়েছি। উন্নত দেশে জিডিপি মাইনাসে। অথচ আমরা সেটি পাঁচ ভাগের ওপরে রেখেছি। আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা, তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। তারপরও কিছু মানুষ এটিকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না।’
এ সময় প্রশ্ন করে শেখ হাসিনা বলেন, কেন তাদের এই দৈনতা? বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি, বিনা পয়সায় যাদের ভ্যাকসিন দিয়ে তরতাজা করেছি, তারাই এখন সমালোচনা করছে।
‘জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাবো। যে যাই বলুক, আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করেছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১১ জুন গণতন্ত্রের বিজয় দিবস। এ দিন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাঙালি ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তোমারা মিথ্যাচার করো, আমরা কাজ করে জবাব দেই।