দীর্ঘদিন ধরে জলশূন্যতা ও কচুরিপানায় ভরে থাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে অবস্থিত লেকটি তার সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা লেকটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। অবশেষে লেকটির গভীরতা ও প্রশস্ততা বাড়াতে খনন করার উদ্যোগ নিলেও এই কার্যক্রমে কাটা পড়ছে লেকের ধারের গাছগুলো। ফলে ছায়াঘেরা লেকটির স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে লেকের ধারের ছোট-বড় অন্তত ৩০টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। পরে আরো কিছু গাছ কাটা পড়বে। এসব গাছ কাটার ফলে লেকের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশ প্রায় গাছশূন্য হয়ে পড়েছে। খননকাজে ব্যবহৃত গাড়ির যাতায়াতের জন্যই এসব গাছ কাটা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রকৌশল দপ্তর। গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পারলে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অবকাঠামো উন্নয়নের নামে ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে প্রায় দেড় হাজার গাছ কাটা হয়েছে। যার ফলে ক্যাম্পাসের পরিবেশ পূর্বের তুলনায় অধিক উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে। ফের লেক সংস্কারের নামে গাছ কাটা হচ্ছে। এতে লেকে ছায়ায় বসার মতো আর গাছ থাকবে না। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপণকে দায়ী করেন তারা। তারা গাছ না কেটে লেক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েসের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, লেক থেকে এসব পুরনো গাছ কর্তন মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উন্নয়নকাজের নামে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করছে। আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে গাছগুলোকে রক্ষা করেও উন্নয়ন বা সংস্কারকাজ করা যায়। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে এমন করতে হতো না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক টিপু সুলতান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এস্টেট অফিসকে না জানিয়েই প্রকৌশল দপ্তর গাছগুলো কেটেছে। জানার পর আমি পদক্ষেপ নিতে গেলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের অনুমতির কথা বলেছে। এরপর তো আমি আর কিছু করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, লেকের সৌন্দর্য বাড়াতেই কাজ চলছে। মাটি খননের গাড়ি যাতায়াতের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গাছ কাটা হয়েছে। উপ-উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য) অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যে পরিমাণ গাছ কাটা পড়ছে আমরা এর তিন গুণ গাছ লাগাব, এটা নিশ্চিত করছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আলোকে এসব গাছ লাগানো হবে। ’