‘আমি মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাসী’ এমন দৃঢ়তা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেনতেনভাবে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছে আমার নেই। যখন মাঝপথে কেউ নির্বাচন ছেড়ে চলে যায়, তখন তো মাঠ ফাঁকা। বাকিরা তখন যা খুশি, তাই করতে পারে। সেই দোষ তো আওয়ামী লীগের না। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তবে কাকে সরকারপ্রধান করবে? গতকাল বুধবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার ক্ষমতার ইচ্ছা হলো আমার দেশের উন্নতি করা। আমি নির্বাচন করব, জিতে ক্ষমতায় আসব। কিন্তু জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। যেনতেনভাবে প্রধানমন্ত্রী হওয়া আমার লক্ষ্য ছিল না কখনও। তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় গিয়ে পদ্মা সেতুর সমীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছিল। বন্যার দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিলিটারি ডিকটেটররা যা করেছে তার বিরুদ্ধে আমিই সংগ্রাম করেছি। আমিই আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম, গ্রেনেড-বোমা-গুলির সম্মুখীন আমিই হয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্রটা করতে পেরেছি বলেই, ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজকের এই উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দলের জন্মস্থান কোথায়? মূল একটি দল আছে বিএনপি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরশাসক। তিনি খুনি মোশতাকের সঙ্গে হাত মেলান। জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনি। তিনি আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। তিনি ‘কারফিউ গণতন্ত্র’ দিয়েছেন। তার হাতে তৈরি দল বিএনপি। আরেক দল জাতীয় পার্টিও একইভাবে স্বৈরশাসকের হাতে তৈরি। যে দলগুলো তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি, সেই দলগুলোর কাছে কী আশা করেন? ওই দলের নেতৃত্ব কার হাতে? একজন অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। নির্বাহী ক্ষমতা বলে সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগটা দিয়েছি বয়সের কথা বিবেচনা করে। আরেকজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও পলাতক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি একেক সিটে দিনে তিনবার করে প্রার্থী পরিবর্তন করে। ঢাকা থেকে একজন ঠিক হয়। আবার লন্ডন থেকে আরেকজন। যে যত টাকা দিয়েছে, তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তবে কাকে সরকারপ্রধান করবে? কোনো দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে সরকারপ্রধান হবেন, সেটা আগেই বিবেচনা করা হয়। তারা যে নির্বাচন করবে, তাতে কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে? সে তো দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে কত টাকা খরচ করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেল একটু খোঁজ করেন। এখানে গণতন্ত্রের দোষ কোথায়? আর জাতীয় পার্টির তো তথৈবচ অবস্থা। তাদের তো সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। আর আমাদের বাকি ছিল বাম দলগুলো। তারা তো ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র হতে হতে দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন। ভাঙতে ভাঙতে বাম থেকে ডানে কাত হয়, কখনো বামে কাত হয়। আর আছে কে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এই উপমহাদেশে প্রাচীন দলের মধ্যে একটি দল। যে দলটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একেবারে গণমানুষের মাধ্যমে। সেই সময় পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে তাদের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে ৪৯ সালের ২৩ জুন। তিনি আরো বলেন, সংবিধান লংঘন করে, মার্শাল ল’ জারি করে যে ক্ষমতা দখল করে প্রথমে তো তার মিলিটারি উর্দি পরেই একাধারে সেনাপ্রধান, একাধারে প্রেসিডেন্ট। ঠিক আইয়ুব খান যেটা করেছিল সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করল। বাংলাদেশে ১৯টি ক্যু হয়। প্রতি রাতে কারফিউ। কিন্তু আমাদের অনেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ল তিনি গণতন্ত্র দিয়েছেন। আমি বলতাম, এটা কারফিউ গণতন্ত্র। তার হাতে তৈরি করা হলো বিএনপি। অর্থাৎ ক্ষমতায় থেকে প্রথমে ‘হ্যাঁ’- ‘না’ ভোট, সেই ভোট কেমন হয়েছিল? ‘না’ ভোটের পাত্তাও ছিল না, সব ‘হ্যাঁ’। এরপর এলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেটাও একটা নির্বাচনের খেলা। তারপর এলো সংসদ নির্বাচন ১৯৭৯ সালে। সেখনেও দল ভাঙা-গড়া, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর থেকে একে ওকে নিয়ে মানে এ-গাছের ছাল, ও-গাছের বাকল সব দিয়ে জোড়া দেওয়া। মানে ক্ষমতায় বসে একটা দল তৈরি করা। সেই দলটাই হয়ে গেছে মূল দল বিএনপি।
জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে আরেকটা দল জাতীয় পার্টি ওইভাবেই তৈরি। আরেক মিলিটারি ডিকটেটর ক্ষমতায় বসে জাতীয় পার্টি করেছে। যে দলগুলো তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি। তারপর আবার দলের নেতৃত্বটা কার হাতে? কে নেতা? আপনারা কীভাবে বলেন নির্বাচনে কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি! বাস্তবতা সবাই ভুলে যায়। একটা মিথ্যা আপনি বারবার বলতে পারেন, সত্যের শক্তিটা একবার। সত্যটা একবারই বলতে পারেন। আমাদের এখানে অনেকেই আছে বা বিদেশেও তাদের কাছে অপপ্রচার করা হয় যে পার্টিশিপেটরি না। একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠে দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখব কম্পিটিশনে জনগণ যাকে চায়। আমার কথা একটাই স্পষ্ট, একটা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ অনেক থাকে; কিন্তু ও রকম সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তো আমি হইনি কখনো! ১৯৯১ সালেও হতে পারতাম। যখন জাস্টিস সাহাবুদ্দিন সাহেব আমাদের কেয়ারটেকার সরকার প্রধান। তিনি যখন আমাকে ডেকে বলেছিলেন, জামায়াত এবং জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ মেজরিটি আপনি সরকার গঠন করেন, আমি মাফ চেয়ে চলে এসেছিলাম। না, আমি এভাবে ক্ষমতায় যাব না। আমি যখন সিট পাইনি তখন যাব না। আমি যাব তখনই যখন আমার কাছে অ্যাবসুলেট পাওয়ার থাকবে। অর্থাৎ আমার ক্ষমতার ইচ্ছা হলো আমার দেশের উন্নতি করা। আর সেটা কি আমি প্রমাণ করিনি? বাংলাদেশের ১৩ বছর আগের চেহারাটা চিন্তা করেন?
শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেটুকু করেছি. সেটা তো ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলাম। ২০০১ থেকে ২০০৬ দুর্নীতিতে বাংলাদেশ ৫ বার চ্যাম্পিয়ন। লুটপাট-দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-বাংলা ভাই কী না হয়েছে তখন। তারপর এলো ইমার্জেন্সি। এই ৮ বছর তো নষ্ট হলো জাতির জীবন থেকে। আমাকে আসতে দেওয়া হলো না। আমি আসতে পারতাম ক্ষমতায়, সেটা আপনাদের মনে রাখা উচিত। আমাকে যখন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছিল, আমেরিকায় এনার্জি মিনিস্টার এসেছিল এখানে। আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল এবং ইন্ডিয়ারও প্রস্তাব ছিল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমেরিকান কোম্পানি গ্যাস উত্তোলন করবে আর ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমার কথা ছিল স্পষ্ট, গ্যাসের মালিক দেশের জনগণ। আমার দেশের চাহিদা পূরণ হওয়ার পর ৫০ বছরের রিজার্ভ থাকবে। তারপর যদি অতিরিক্ত হয় আমি বিক্রি করব। এটাই তো আমার অপরাধ ছিল, দেশের সম্পদ আমি রক্ষা করতে চেয়েছিলাম? আর সেই কারণে ২০০১-এ আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। কারণ এই ২ দেশের সম্মিলিত শক্তি আর আমাদের দেশের মানুষ তো বিদেশি দেখলে এমনি হুমরি খেয়ে পড়ে। তাদের পদতলেই যেন বেহেস্ত। এ রকম একটা মানসিকতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন বিচারপতি লতিফুর রহমান ছিলেন আমাদের কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান। ব্যারিস্টার ইশতিয়াক সাহেব থেকে শুরু করে ড. কামাল হোসেন, সাহাবুদ্দিন সাহেবসহ সবাই মিলেই তখন লেগে গেলেন পেছনে, কিছুতেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না। কারণ আমি এত বড় একটা দেশে এত বড় একটা বেয়াদবি করে ফেলেছি; আমার দেশের গ্যাস আমি বিক্রি করব না বলে দিয়েছি। আমাকে আমেরিকা দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেও এই প্রস্তাব, আমি একই কথা বলেছি। যেনতেনভাবে প্রধানমন্ত্রী হওয়া আমার লক্ষ্য না। কেয়ারটেকার সরকারের সময় যখন আমাকে অ্যারেস্ট করা হলো, তখন আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আপনি ইলেকশন করবেন না, আপনাকে প্রাইম মিনিস্টারের মর্যাদা দেওয়া হবে। আমি বলেছিলাম, এই মর্যাদা তো আমি চাই না। যে ব্রিগেডিয়ার আমার কাছে গিয়েছিলেন তাকে আমি বলেছিলাম, আপনার আর্মি চিফকে বলে দিয়েন ১৯৫৪ সালে তার জন্ম, আমার বাপ (বঙ্গবন্ধু) ১৯৫৪ সালে মন্ত্রী ছিল। আমরা মন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম। কাজে ক্ষমতার লোভ আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের ক্ষেত্রে একটা কথা বলব নিজের ভাড় ভালো না তো গোয়ালার ঘিয়ের দোষ দিয়ে লাভ কী! তারা পদ্মা সেতুর ঋণ বন্ধ করল কাদের প্ররোচনায়? সেটা তো আমার দেশেরই কিছু মানুষের প্ররোচনায়। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের আমরা কিন্তু অংশীদার। তারা কিন্তু কোনো অনুদান দেয় না। আমরা লোন নেই। যে টাকাটা বাংলাদেশের অনুকূলে বরাদ্দ হবে, সেটা টাকাটা নষ্ট করার কোনো রাইট তাদের নেই। হয়তো পদ্মা সেতু থেকে তারা টাকা বন্ধ করেছে, টাকা কিন্তু আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। এই টাকা অন্যান্য প্রজেক্টে ব্যবহার করতে পেরেছি। এটা কিন্তু করা যায়। আমাদের অনেকে জানে না, আমি জানি না কেন জানে না। এরা কোনো দাতা না, আমি তাদের কাছে ভিক্ষা নেই না। ব্যাংকের একটা অংশীদার হিসেবে আমরা লোন নিই এবং সুদসহ আমরা সেই লোন পরিশোধ করি। ওইটুকু সুবিধা স্বল্প সুদে। আমরা কারো করুণা ভিক্ষা নেই না। তিনি বলেন, সাহস নিয়ে নিজেদের টাকায় নিজেরা পদ্মা সেতু করার ফলে আজকে বাংলাদেশের সম্মানটা ফিরে এসেছে। নইলে আমাদের দেশের সকলের একটা পারসেপশন ছিল, একটা মানসিকতা ছিল যে, আমরা অন্যের অর্থায়ন ছাড়া কিছুই করতে পারব না। এই যে একটা পরনির্ভরশীলতা, পরমুখাপেক্ষিতা এটাই কিন্তু আমাদের মাঝে ছিল। একটা দৈন্যতা ছিল। বিশ্বব্যাংক যখন এই টাকাটা তুলে নিয়ে গেল আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিলাম, অন্তত আমরা সেই জায়গার থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছি। সেই অচলায়তন ভেঙে আমরা যে একটা আত্মমর্যাদাশীল জাতি, আমরা যে পারি, সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিবন্ধকতা ও সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়া আমি পেয়েছিলাম, সেটাই কিন্তু আমার সাহস আর শক্তি। মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদেরই সাহসে এই পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। নিজস্ব অর্থয়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়ার পর শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তা বাস্তবায়নের কঠিন যাত্রায় সাথে থাকায় দেশের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ২০১১ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সাথে ঋণচুক্তি সই করা হয়। এরপর শুরু হয় ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রের পেছনে কে বা কারা ছিল, তা বহুবার বলেছি। এই ষড়যন্ত্রকারীরা ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের অভ্যন্তরে একটি গ্রুপ ছিল, যারা অন্যায্যভাবে কিছু কিছু বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল। বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিষ্ঠানকে যোগ্য করার লক্ষ্যে পরোক্ষ চাপ দিতে থাকে। রাজি হইনি। এরপর থেকেই তারা পদ্মা সেতুর কার্যক্রমে বাধা দিতে থাকে। দুদক তদন্ত করে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পায়নি। পরে কানাডার আদালতেও প্রমাণ হয়, পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে জাপান সফরে পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতুর প্রস্তাব দিলে জাপান রাজি হয়। ২০০১ সালে পদ্মা সেতুর সমীক্ষার তথ্য আসে। ওই বছরের ৪ জুলাই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে অগ্রাধিকার তালিকায় যুক্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১০ সালের মধ্যে নকশা চূড়ান্ত হয়। পরের বছর জানুয়ারিতে সংশোধিত ডিপিপি দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার করার কারণে ব্যয় বাড়ে। এরপর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে। যুক্ত করা হয় রেল সংযোগ। কংক্রিটের বদলে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামোযুক্ত হয়। পাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও গভীরতা বাড়ে। বাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ব্যয়। ২০১৭ সাল থেকে সরকার জমি অধিগ্রহণে জমির দামের তিনগুণ অর্থ দেয়া শুরু করে। ২০১৬ সালে সেতুর খরচ আবার বাড়ে। ওই সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৯ টাকা কমে যায়। আগামী শনিবার ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।