1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
আমি নিজের হাতে নিজে বন্দি : শেখ হাসিনা | Bastob Chitro24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন

আমি নিজের হাতে নিজে বন্দি : শেখ হাসিনা

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২

দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান

‘২০০৭ সালে ছিলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে বন্দি; এখন আমি নিজের হাতে নিজে বন্দি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক মহামারি করোনার দুই বছর বাইরের কর্মসূচিতে অংশ নিতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনেক দিন পর আজ মন খুলে কথা বললাম। গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
অনুষ্ঠানে এক ঘণ্টা ব্যাপী দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আসলে করোনাভাইরাস বন্দি করে রেখে দিয়েছে আমাকে। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। কারণ, তারা তাদের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছে। আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু তাদের নির্বাচনের ইতিহাস এতটা কলুষিত যে তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোন অধিকারই নেই। কোন মুখে তারা বলে? ঢাকা-১০ এ ফালু (মোসাদ্দেক আলী ফালু) ইলেকশন করেছিল যে ইলেকশনের চিত্র সবার নিশ্চই মনে আছে। মাগুরা ইলেকশন হয়- যে ইলেকশন নিয়েই আন্দোলন করে আমরা খালেদা জিয়া উৎখাত করেছি। মিরপুর ইলেকশন-প্রত্যেকটা নির্বাচনের চিত্রই আমরা দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৭ সালের ‘হ্যাঁ-না’ ভোট, ’৭৮ ্এর প্রেসিডেন্ট এবং ’৭৯ এর সাধারণ নির্বাচন, ’৮১ এর নির্বাচন প্রত্যেকটা নির্বাচনই আমাদের দেখা। পাশাপাশি, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনও দেখেছি। তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থার যে উন্নয়ন সেগুলো আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত এবং চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থার আধুনিক ও যুগোপযোগিকরণে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ইভিএম ব্যবস্থা বলবতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সবের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার আবার জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিয়েছে। আর জনগণের শক্তিতে ক্ষমতায় আছি বলেই জনগণের জন্য আমরা কাজ করতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানিদের পদলেহনকারীর দল এখনো বাংলাদেশে জীবিত এটা সব দুঃখজনক। এখনো তারা বাংলাদেশের ভালো কিছু হলে ভালো চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এগিয়ে গেলে তাদের ভালো লাগে না। আজকে যে বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট উৎক্ষেপন করেছি সেটা নিয়েও সমালোচনা, এত টাকা দিয়ে স্যাটালাইট করে কী হবে? এই প্রশ্নও কিন্তু তুলেছে তারা। অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করলে তাদের গায়ে লাগে। কেন? তাহলে তারা কি এখনো সেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের পদলেহনকারী, খোশামদী, তোষামদির দল? গালিটালি দেই না, দেওয়ার রুচিও নেই। তবে একটু না বলে পারি না যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাংলাদেশের মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, পোড়ামাটি নীতি নিয়ে বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করালো ড. মুহম্মদ ইউনুস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটা এমডির পদে তাকে থাকতে হবে। তাকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে। উপদেষ্টা হিসেবে থাকাটা আরও উচ্চ মানের। সেটা সে ছাড়বে না তার এমডিই থাকতে হবে। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না। ড. ইউনুস আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। কিন্তু কোর্ট আর যাই পারুক, তার বয়স তো কমিয়ে দিতে পারে না ১০ বছর। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারে। তখন তার বয়স ৭১ বছর। এই বয়সটা কমাবে কীভাবে? সেই মামলায় সে হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা চলতে থাকে। তিনি আরো বলেন, ড. ইউনুস এবং যেটা আমরা শুনেছি মাহফুজ আনাম, তারা আমেরিকায় চলে যায়। স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারির কাছে ইমেইল পাঠায়। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মি. জোলি যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন তার শেষ কর্মদিবসে কোনো বোর্ড সভায় পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়। যাক, একদিকে সাপে বর হয়েছে। কেন হয়েছে? বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে সেটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু আমাদের এখানের একজন জ্ঞানী লোক বলে ফেললেন যে পদ্মা সেতুতে যে রেল লাইন হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার খরচ হচ্ছে। ৪০ হাজার কোটি টাকা তো ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এই ঋণ শোধ হবে কীভাবে? দক্ষিণবঙ্গের কোনো মানুষ তো রেলে চড়বে না। তারা তো লঞ্চে যাতায়াত করে। তারা রেলে চড়তে যাবে কেন? এই রেল ভায়াবল হবে না। সেতুর কাজ হয়ে গেছে এখন সেতু নিয়ে কথা বলে পারছে না। এখন রেলের কাজ চলছে, এখন রেলের কাজ নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। আমার মনে হয় আমাদের সবার ওনাকে চিনে রাখা উচিত। রেল গাড়ি যখন চালু হবে তখন ওনাকে নিয়ে রেলে চড়ানো উচিত। আর খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। কারণ বিভিন্ন স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে ওটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেওয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না, চড়লে ভেঙে পড়বে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসররাও। এখন তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত। আর যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দুইটা চুবানি দিয়ে উঠাইয়া নেওয়া উচিত। মরে যাতে না যায়। একটু পদ্মা নদীতে দুইটা চুবনি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়। বড় বড় অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণি এই ধরনের অর্বাচিনের মতো কথা বলে কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। মেগা প্রজেক্টগুলো করে না কী খুব ভুল করছি। তারা আয়েশে বসে থাকে আর আমার তৈরি করা সব টেলিভিশনে গিয়ে কথা বলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করি। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশে আমরা ২০০৯-এর পরে যে সরকার গঠন করেছি তার পরেও আমাদের কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। অগ্নি সন্ত্রাস করে বিএনপি জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারে। পেট্রোল বোমা মারে। আমরা রাস্তাঘাট বানাই, তারা রাস্তাঘাট কাটে। আমরা বৃক্ষরোপণ করি তারা গাছ কাটে। এভাবে দেশকে তারা বার বার ধ্বংসের দিকে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। সরকার উৎখাত করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের ডাকে তো জনগণ সাড়া দেয়নি। ওরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে। ওই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়েছিল জীবনে কোনো দিন রাজনীতি করবে না। এ মুচলেকা দিয়েই কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু এই মামলায় বিচারের রায়ে সে সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া। কারাগার থেকে এখন বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছি, অসুস্থ সে জন্য। এইটুকু মানবিকতা দেখিয়েছি, যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে বার বার, তাকেই আমি এই করুণা ভিক্ষা দিয়েছি যে সে এখন বাসায় থাকতে পারে। সাজাপ্রাপ্ত আসামিও এখন বাসায় থাকতে পারে- এটা নির্বাহী আদেশেই দেওয়া হয়েছে।
দেশে টিকা কার্যক্রমে সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে দক্ষিণ এশিয়ায় সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করবো টিকাটা বিনা পয়সায় দিয়েছি আমি। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। সে টিকা ওরা নিয়েছে, এটাতো বাদ দেয়নি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমরা বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি। এবং আমাদের যে টার্গেটে যাওয়ার কথা ছিল তার শতভাগ দিতে পেরেছি। বুস্টার ডোজও আমরা শুরু করেছি। তারাতো নিশ্চয়ই দুটো ডোজ নিয়েছেন, বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। তো আমার টাকায় বিনা পয়সায় ঐ টিকা নিতে পারলো, আর তারপর আমাদের উন্নয়নটা তাদের চোখে পরে না। তো এখন কি টিকা চোখেও দিতে হবে নাকি, সেটাই মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এর ভেতরে আমাদের কিছু আঁতেল আবার জুটেছে। একজন অর্থনীতিবিদ বলেই দিলো আমরা যে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছি এটা না কী অর্থনৈতিকভাবে ভীষণ ক্ষতিকর। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র- এটা হচ্ছে সব থেকে পরিবেশবান্ধব। গ্যাস তো চিরদিন থাকে না। একেকটা ক‚প খনন করে তার একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। তেল ভিত্তিক, গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ আমরা করি। অনেক খরচেরও ব্যাপার। যদি কোনো দিন এমন হয় যে আমাদের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে তখন আমাদের এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টই তো আমাদের বিদ্যুৎ দেবে। এটা সব থেকে পরিবেশ বান্ধব একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে বিনিয়োগটা বড় করে দেখা যায়। কিন্তু এর বিদ্যুৎ যখন উৎপাদন হবে। আর এই বিদ্যুৎ যখন মানুষ ব্যবহার করবে আমাদের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখবে। আজকে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি বলেই সারা বাংলাদেশে প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দিতে পেরেছি। আমরা যখন শুরু করলাম রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে তখন সেটা নিয়েও অনেক কথা বলে গেছে। আজকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন আমরা করছি, সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেই আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে যে অর্থনীতিবিদ কথা বলছেন তাকে আমি বলবো তিনি কি এটা প্রকৃততথ্য জেনেই বলছেন নাকি না জেনে? আমি তার জ্ঞান নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবো না, তারা অনেক ভালো লেখাপড়া জানেন। কিন্তু একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পেয়ে মানুষের একটা জাতির যে কতটুকু উন্নতি হতে পারে সেটা আজকের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়নটা বাইরের লোকও দেখে কিন্তু তারা দেখে না। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই ঘোষণা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে। আজকে সেই ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেই আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। এটা বোধহয় ভুলে যায় তারা যে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে সেটা কিন্তু আমরা দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার আমলে, জিয়ার আমলে, এরশাদের আমলে তাদের কী কথা বলার কোনো সুযোগ ছিল? কতটুকু অধিকার ভোগ করতো তারা? বেসরকারি টেলিভিশন এত দিয়ে দিয়েছি যে সারা দিন রাত টকশো করে। আমি মাঝে মাঝে বলি এত টক টক কথা না বলে একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন। কত আর টক টক কথা বলবেন। টকশো তারা করে যাচ্ছে। কেউ তো তাদের গলা চিপে ধরেনি। মুখ চেপেও ধরি না। কথা বলেই যাচ্ছে। তবে হ্যাঁ, সব কথা বলার শেষে বলে কথা বলতে দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, আমাদের বিএনপির এক নেতা তো সারা দিন মুখে মাইক লাগিয়েই আছে। সারাক্ষণ কথা বলেই যাচ্ছে। একবার কথা বলতে বলতে গলায় অসুখও হলো। যাক, চিকিৎসা করে এসে আবার কথা বলছে। তার কথা তো কেউ বন্ধ করছে না। তাদের আন্দোলনে যদি জনগণ সাড়া না দেয়, সে দোষটা কার? ##

কক্সবাজার উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী
কক্সবাজার ব্যুরো : কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিভাবে কক্সবাজার অত্যন্ত সুন্দর ও আকর্ষণীয় এলাকা। সাগর-পাহাড় নিয়ে কক্সবাজারে একটি চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। ৮০ কি.মি সৈকত পৃথিবীর কোথাও নেই। একমাত্র কক্সবাজারেই আছে। একদিকে সাগর অন্যদিকে পাহাড় এর মনোরম দৃশ্য এই এলাকাটির উন্নয়ন হওয়া দরকার। এই চিন্তা থেকেই আমরা কক্সবাজারের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে এটাই আমরা চাই।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, কক্সবাজার একটি আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা। সুযোগ হলেই বাবা আমাদেরকে কক্সবাজার নিয়ে যেতেন। উখিয়ার ছায়াঘেরা পথে হেঁটেছি। সৈকতে লাল কাকড়ার পেছনে অনেক ছুটাছুটি করেও ধরতে পারিনি। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল কক্সবাজারের উন্নয়ন করা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ঘাতকরা স্বপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করে সেই স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত করে। তিনি বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল সদস্য ও বিভিন্ন দুর্যোগে কক্সবাজার উপকূলে নিহত সবাইকে স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সমুদ্র শাসন আইন করে গিয়েছিলেন। এখন কক্সবাজারে একটি সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কক্সবাজারকে একটি আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এলক্ষ্য বাস্তবায়নে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব) ফোরকান আহমদকে ধন্যবাদ জানিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নতুন ভবনের পাশেই মুক্তিযোদ্ধা মাঠে কউকের নিজস্ব নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সকাল ১০টায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল, (অব.) ফোরকান আহমদ। অনুষ্ঠানে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদ ও সচিব শহীদুল্লাহ্ খন্দকার বক্তব্য রাখেন।

কউক চেয়ারম্যান বলেন, কক্সবাজার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে এসেছেন। কক্সবাজারকে একটি আধুনিক পর্যটন নগরী গঠনসহ সার্বিক উন্নয়নে আপনার সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এসময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, এমপি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি