দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের অনেক গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিচ্ছেন ফেসবুকে পোস্ট।
লোডশেডিংয়ের কারণে হিমাগারের রাখা পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প–কলকারখানা ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। দেশে বিদ্যুতের বড় মাত্রার এই লোডশেডিংয়ের ফলে গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেশব্যাপী বড় মাত্রায় কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ফেসবুক পোস্টে উত্তরাঞ্চলের কেউ কেউ জানিয়েছেন, শনিবার থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। ১০ মিনিট বিদ্যুৎ থাকলে আধা ঘণ্টা থাকছে না। আবার ২০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ এলে তারপর এক ঘণ্টা থাকছে না। এভাবে চলছে।
লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শোহান রহমান সাব্বির নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘যুদ্ধ লাগে রাশিয়া ইউক্রেনে, অন্ধকার হয় বাংলাদেশে, আসলেই অদ্ভুত এক পরিস্থিতি, এরপরেও, এই প্রজন্ম এর অনেক পোলাপান লোডশেডিং এর প্যারাগ্রাফই মুখস্থ করছে, দেখে নাই, একটু দেখুক চিনুক। লোডশেডিং এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব।’’
সজল নুরুজ্জামান নামে এক পাঠক লিখেছেন, ‘‘সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে – তাই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি সিঙ্গাপুরের চাইতে শক্তিশালী। গ্যাসের দাম বাড়া কোনো অজুহাত হতে পারে না। বেশি দাম দিয়ে গ্যাস কিনে আনা হোক। এত বিলিয়ন ডলার ব্যাঙ্কে রেখে কী করব?’’
মোঃ মোরশেদুল হাসান লিখেছেন, ‘‘খুব সুসংবাদ দিলেন। এখন আমাদের করণীয় কি? আমরা কি খুব দ্রুত হারিকেনের যুগে ফিরে যাচ্ছি নাকি? বাজারে তো এখন হারিকেন পাওয়া যায় না, কিভাবে কি হবে বুঝতে পারছি না। হারিকেন কিনলেও তো কেরোসিনের অভাব পড়বে।’’
স্মরণীকা ইসলাম লিখেছেন, ‘‘দেশ ডিজিটাল কিন্তু বিদ্যুৎ নাই। মানুষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। গরমে নাজেহাল হচ্ছে। কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ আর শিশুরা বেশি। এই অবস্থা হবে আগে থেকে জানত না? বিভিন্ন উৎসব করে টাকা না উড়ায়ে তা দিয়ে গ্যাস কিনতে পারতো না?! কি এক স্বেচ্ছাচারিতার দেশ।’’
সিদ্দিক সানী লিখেছেন, ‘‘টেকসই উন্নয়ন চাইলে বসতবাড়িতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন একটি স্থায়ী সমাধান হতে পারে। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণের সময়ই এটা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। তাতে যেকোনো সংকটে নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখা যাবে। আসুন বিদ্যুতের অপচয় রোধ করি। নিজে সচেতন হই অন্যকেও উৎসাহিত করি।’’