Headline
কুষ্টিয়ার আ.লীগের সাবেক এমপি রউফ কারাগারে ইবির আইআইইআরের পরিচালক হলেন অধ্যাপক ইকবাল ছাত্র আন্দোলনে নিহত দাফনের ৫৫ দিন পর কবর থেকে তোলা হলো বাবলু ফারাজীর মরদেহ কুষ্টিয়ায় খবরওয়ালা পত্রিকার ১ ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু ১৩ অক্টোবর ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট মেয়ের সঙ্গে দিল্লিতে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাবিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় জড়িতরা শনাক্ত, ৫ জনই ছাত্রদলকর্মী কুষ্টিয়া গড়াই নদীর উপকূলবর্তী এলাকায় পানি বাড়াতে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন

সয়াবিনের দাম কমলো

ঢাকা অফিস / ১৩ Time View
Update : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২

দেশে কেজিতে ৬ টাকা কমেছে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ

বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল সয়াবিনের দাম ১১ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। বাংলাদেশের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা দাম কমাতে না চাইলেও এ নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, সয়াবিনের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে আনা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সয়াবিনের দাম কমানো হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। নতুন দাম অনুযায়ী বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম কমে হলো ১৯৯ টাকা। গতকাল সংগঠনের নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে সচিবালয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সংবাদ সম্মেলন করে সয়াবিনের দাম কমানোর ইঙ্গিত দেন।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন দাম অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৮০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৯৯ টাকা, পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ৯ জুন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৭ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়। তারও আগে একদিনে প্রতিকেজি সয়াবিনের দাম ৩৮ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধির পর সে সময় এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৮৫ টাকা। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয় ২০৫ টাকা। এছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় সর্বোচ্চ ৯৯৭ টাকা। এক লিটার খোলা পাম তেলের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৮ টাকায়।

এর আগে বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলনের পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ ভোজ্যতেলের দাম কমার ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে সুখবর আসতে পারে। আশা করি, তেলের দাম কমবে। সেটি নির্ধারণের জন্য হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে।

সচিব তপন কান্তি ঘোষ উল্লেখ করেন, দেশের ভোজ্যতেল শোধনাগার এবং বিপণন সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করা হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম কমবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
মহামারির প্রভাবে আগেই বেড়েছিল তেলের দাম। এর সঙ্গে গত কয়েক মাসে যোগ হয় রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট। সব মিলিয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায় এই নিত্যপণ্যের দাম। এদিকে, আমদানিকারকরাও সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন উপায়ে কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে বেশি মুনাফা লুটছেন। গত ১৫ জুন, আন্তর্জাতিক বাজারে এক টন অপরিশোধিত পাম তেলের দাম ১ হাজার ২৯০ ডলারে পৌঁছায়, যা এক মাস আগেও ছিল ১ হাজার ৭১৭ ডলার। ইন্ডেক্সমুন্ডির তথ্য মতে, চলতি বছরের এপ্রিলে দাম ছিল ১ হাজার ৬৮৩ ডলার এবং মার্চে ছিল ১ হাজার ৭৭৭ ডলার।

এছাড়া, গত ১৬ জুন সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ১১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৭২৮ ডলারে নেমে আসে, যা মে মাসের মাঝামাঝি ছিল ১ হাজার ৯৬৩ ডলার, এপ্রিলে ছিল ১ হাজার ৯৪৮ এবং মার্চে ছিল ১ হাজার ৯৫৭ ডলার। তবে, বিশ্বব্যাপী দাম কমলেও বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৯ জুন প্রতি লিটার (বোতলজাত) সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ২০৫ টাকা নির্ধারণ করে। অন্যদিকে, পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমিয়ে ১৫৮ টাকা করা হয়। অবশ্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুই মাস ধরে দাম প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল।
এদিকে সদ্য শেষ হওয়া ডব্লিউটিও’র মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সে (এমসি ১২) সম্পর্কে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও কয়েক বছর বাজার সুবিধা প্রাপ্তির আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ গত ১২-১৬ জুন জেনেভায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও’র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আরো কয়েক বছর বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণের জন্য জোরালো দাবি তুলে ধরে। এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর ১২ বছর বাজার সুবিধা পাবার সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকলেও তা পরে ৬ থেকে ৯ বছরে বৃদ্ধি দাবি জোরালো হয়েছে। সম্মেলনে বিশ^বাণিজ্য সংস্থার আওতায় প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ আরো কিছু সময় পর্যন্ত বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে মর্মে সম্মেলনে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে পরর্তীতে এ বিষয়ে আরো আলোচনার পথ সুগম হলো। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এমসি ১৩ সমে¥লনে ভালো কিছু ফল পাওয়া যাবে। সম্মেলনে বাংলাদেশের দেয়া প্রস্তাবগুলো জোরালো ভাবে সমর্থন করা হয়।

বাণিজ্য সচিব বলেন, এমসি ১২ সম্মেলনে মৎস্য খাতে ভর্তুকির বিষয়ে একটি চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে। এত অবৈধ ফিসিং ভেসেলে কোনো ভর্তুকি প্রদান করা যাবে না এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ করা যাবে না। এলডিসিভুক্ত কোনো দেশ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সে দেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাবে না। এছাড়া, কোভিড-১৯ এবং ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করে ট্রিপস চুক্তি মোতাবেক বাণিজ্য সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে, খাদ্যদ্রব্য রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব বলেন, মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্স চলাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী সিঙ্গাপুর, নেপাল, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন এবং ইউরোপিয়ন পার্লামেন্ট সদস্যদের সাথে পৃথকভাবে দ্বিপাক্ষিক সভা করেন। এতে দেশগুলোতে রফতানি বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও বাংলাদেশের জন্য বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, নেপালের সাথে পিটিএ স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সিংগাপুর বাংলাদেশের সাথে এফটিএ স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করে।

উল্লেখ্য, জেনেভায় অনুষ্ঠিত মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্স (এমসি ১২) এ আউটকাম ডকুমেন্টসহ ৭টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জেনারেল কাউন্সিলের ৩টি সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি’র নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category