1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
সুযোগে পিছিয়ে রফতানি খাত | Bastob Chitro24
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

সুযোগে পিছিয়ে রফতানি খাত

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২

পোশাক খাতে অতিনির্ভরশীলতা, বৈচিত্র্য আনার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের রফতানি আয়ে দ্বিতীয় হোম টেক্সটাইল ষ দীর্ঘদিন পর কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে ১০০ কোটি ডলারে

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুমোদন পেয়েছে গত নভেম্বরে। এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে রফতানি খাত। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকেই দেশের রফতানি বাণিজ্যের কথা আসলে সবার মুখে একটি নাম পোশাক খাত। রফতানি বাণিজ্যে প্রণোদনাসহ সকল সুযোগ-সুবিধাও এই খাতটিই ভোগ করছে। তাই অতি দ্রুত এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রফতানি বহুমুখীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এ জন্য দু-একটি খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত না করে দেশের সব শিল্প খাতকে সমান সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা। অন্যান্য খাতকেও ব্যাক টু ব্যাক এলসি, বন্ডেড ওয়্যারহাউস, ডিউটি ফ্রি এক্সেস ইত্যাদি সুবিধা দিতে হবে। এসব সুবিধা দিলে সম্ভাবনাময় অনেক পণ্যই রফতানিতে ভালো করতে পারবে বলে মত তাদের। অবশ্য বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গার্মেন্টসের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে রফতানি পণ্যে আরো বৈচিত্র্য আনার কথা বলেছেন। নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতেও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গার্মেন্টস খাত নিয়ে বাংলাদেশের দুর্বলতা অর্থনীতির বাকি খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে বলে এক প্রবন্ধে মন্তব্য করেছেন উইলসন সেন্টারের ২০২১-২০২২-ফেলো, সঞ্জয় কাঠুরিয়া। ফরেন পলিসি ডটকমে লেখা এক কলামে তিনি বাংলাদেশের গার্মেস্টস খাত নিয়ে এ মন্তব্য করেন। তার লেখায় এ-ও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বাকি উৎপাদন খাতের সমস্যা হলো দেশটির শাসনব্যবস্থা পোশাকের প্রতি দৃঢ়ভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। একই সঙ্গে গার্মেন্টস নিয়ে বাংলাদেশের আবেগ, রাজনৈতিক দলগুলো, অর্থাৎ বাকি অর্থনীতির ওপর চরম ক্ষতি হচ্ছে। প্রবন্ধে তিনি আরো উল্লেখ করেন, পোশাকের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা একটি ‘সম্পদ অভিশাপ’ হতে পারে। সামনে সেটাকে দেখে নাও বোঝা যেতে পারে।

একইভাবে শুধু পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভর না করে পণ্যে বৈচিত্র্যকরণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, একটি পণ্যের ওপর নির্ভরতা দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এ বিষয়ে তিনি ভেনিজুয়েলার পতনের গল্পও শুনিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একটিমাত্র পণ্য তেলনির্ভর দেশটি কিভাবে দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্লেষণ করেন। অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছিলেন, যদি রফতানি বাণিজ্যের ধারায় পরিবর্তন না আনা যায়, তাহলে রফতানি বাণিজ্য টেকসই করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। এখন দেশের রফতানি বাণিজ্য সেদিকেই যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

সূত্র মতে, বাংলাদেশের রফতানি পণ্য বলতেই সবার আগে চলে আসে তৈরী পোশাক শিল্প। পোশাক খাতসহ হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি পণ্যের ওপরই নির্ভরশীল দেশের রফতানি বাণিজ্য। বাংলাদেশ থেকে সাত শতাধিক পণ্য রফতানি হয়। সংখ্যার দিক থেকে এটি বিশাল। তবে তৈরী পোশাক শিল্পের বাইরে কখনো কখনো পাট, হিমায়িত খাদ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নিয়ে আলোচনা হয়। সরকারের কাছ থেকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতে দেন-দরবারও করেন কয়েকটি খাতের উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে পোশাক খাতই একচেটিয়া সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করায় অন্যান্য খাত রফতানিতে এগোতে পারছে না। আর পণ্য রফতানির গন্তব্যও খুব অল্প। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশেই মোট রফতানির ৮০ ভাগ রফতানি হয়, যা দেশের রফতানি বাণিজ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ করোনাভাইরাস মহামারির মহাসঙ্কটের সময় গত অর্থবছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা এনেছে যে খাত, সেটি থাকছে অগোচরে। সেই খাতটি হচ্ছে হোম টেক্সটাইল। বাংলাদেশের পণ্য রফতানির তালিকায় বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে খাতটি। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের মধ্যে রফতানিকারকরা হোম টেক্সটাইল শিপিং থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন, যা গত অর্থবছরের একই সময় থেকে ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। করোনাকালে চীন, ভারত এবং রাজনৈতিক অস্থিরতায় পাকিস্তানের বাজার বাংলাদেশে চলে আসায় এই ‘নীরব বিপ্লব’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ হোম টেক্সটাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ। পোশাক খাতের মতো সরকারের সুনজর পেলে এই খাত থেকে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব বলে আশার কথা শুনিয়েছেন অ্যাপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দুঃখ করে হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমাদের প্রতি কারও নজর নেই। না সরকার, না মিডিয়া। সবাই ব্যস্ত পোশাক খাত নিয়ে। সবকিছু ওদের জন্য। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লাখ লাখ কোটি টাকার যে প্রণোদনা দেয়া হলো, তার কিছুই পাইনি আমরা।

পাকিস্তানের বাজার বাংলাদেশে চলে আসায় এই ‘বিপ্লব’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ হোম টেক্সটাইল রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ জাবের। চীনের কিছু বাজারও বাংলাদেশে এসেছে বলে জানান তিনি। দেশের মোট হোম টেক্সটাইল রফতানির ৭০ শতাংশই রফতানি করে এই প্রতিষ্ঠানটি।

যদিও দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাত পোশাক। রফতানি আয়ে দীর্ঘদিন ধরে একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছে খাতটি। অথচ যে কোনো একটি খাতের ওপর অতিনির্ভরশীলতা অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। কারণ, পোশাক রফতানি কমে গেলে পুরো অর্থনীতিই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তবে দেরিতে হলেও পোশাকের পর একসঙ্গে তিনটি খাতের পণ্য রফতানি ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে। এগুলো হচ্ছে-হোম টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এছাড়া, পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানিও শত কোটি ডলার ছুঁইছুঁই করছে। এ ধারাবাহিকতায় আরো আছে প্রকৌশল পণ্য ও হিমায়িত খাদ্য। রফতানি বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধানের প্রয়োজনীতা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, করোনা মহামারির পর অন্যান্য রফতানি খাতের অর্জন সত্যিই অর্থনীতির জন্য অনেক বড় সুখবর। আমাদের নতুন নতুন খাত যেমন-ওষুধ, আইটি, কৃষি খাত-এগুলো যখন নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে, বোঝা যাচ্ছে রফতানির স্থায়িত্ব অনেক বেড়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির জন্য এটা অবশ্যই অনেক ভালো লক্ষণ। পোশাক খাতের পাশাপাশি নতুন যেসব খাত এগিয়ে আসছে সেগুলোর প্রতিও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই পোশাক খাতে ভর করে রফতানি এগোচ্ছে। তবে অতিমাত্রায় কারো ওপর নির্ভরশীল হলে তার স্থায়িত্ব ভালো থাকে না। তাই পণ্যের বহুমুখীকরণ যত বাড়বে, রফতানি তত স্বাস্থ্যবান ও স্থায়ী হবে। নতুন যে খাতগুলো এগিয়ে আসছে, এসব পণ্যগুলোকে আরো বেশি যত্ন নিতে হবে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত বলেন, অনেকদিন থেকেই আমরা চেষ্টা করছি পোশাক খাতের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ বাড়ানোর। তিনি বলেন, আমাদের কৃষিপণ্যের বাজারে বিপুল সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। আরেকটি সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে চামড়া খাত। যদিও এ খাতের জন্য আমরা খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। ট্যানারি পল্লীর সিইটিপি আমরা এখনো কার্যকর করতে পারিনি। তাই রফতানিতে বৈচিত্র্যতা ফিরছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি এতে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ আমাদের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। রফতানির এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে পোশাক খাতের মতো অন্য রফতানিমুখী খাতগুলোকেও একই সুবিধা দিতে হবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) রফতানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে করোনা মহামারির পর চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পণ্য রফতানিতে ভালো করেছে বাংলাদেশ। তাতে দুই মাস বাকি থাকতেই চলতি অর্থবছরের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার কাছাকাছি পণ্য রফতানি হয়েছে। এ অর্থবছরে পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। আর চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। দেশীয় মুদ্রায় যা পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকার সমান। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি। সবকিছু ঠিক থাকলে পণ্য রফতানি চলতি অর্থবছর শেষে ৫ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছে যাবে। এর আগে এক বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রফতানি হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলার। করোনা সংক্রমণ বিস্তৃতির কারণে পরের দুই বছরে রফতানি কম হয়।

গবেষণা সংস্থা সিপিডির ফেলো. ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, তৈরী পোশাকবহির্ভূত পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বাজারভিত্তিক, পণ্যমানভিত্তিক ও শুল্কবহির্ভূত বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করা বিশেষ প্রয়োজন। তিনি বলেন, সব পণ্যের বাজারে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা খুব সীমিত আকারেই রফতানি বাড়াতে পারছে ভিন্ন ভিন্ন কারণে। অপ্রচলিত প্রায় প্রতিটি বাজারে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
এগিয়েছে হোম টেক্সটাইল : হোম টেক্সটাইল রফতানি গত অর্থবছর ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছায়। চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার দুই মাস আগেই গত বছরের রফতানিকে ছাড়িয়ে গেছে হোম টেক্সটাইল খাত। গত ১০ মাসে ১৩৩ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রফতানি হয়েছে। এ আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ শতাংশ বেশি। হোম টেক্সটাইল বলতে বোঝায়Ñ ঘরের অন্দরের শোভাবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা বস্ত্রপণ্য। এ কারণে এ ধরনের পণ্যকে হোমটেক্স বা ঘরোয়া টেক্সটাইলও বলা হয়ে থাকে। বিছানার চাদর, বালিশ, বালিশের কাভার, টেবিল ক্লথ, পর্দা, ফ্লোর ম্যাট, কার্পেট, জিকজাক গালিচা, ফার্নিচারে ব্যবহার করা ফেব্রিকস, তোশক, পাপোশ, খাবার টেবিলের রানার, কৃত্রিম ফুল, নকশিকাঁথা, খেলনা, কম্বলের বিকল্প কমফোর্টার, বাথরুম টাওয়েল, রান্নাঘর ও গৃহসজ্জায় ব্যবহার হয় এমন সব ধরনের পণ্য এ খাতের আওতাভুক্ত। এ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল তুলা, পাট, শন, রেশম, ভেড়া-ছাগলের পশম, অন্যান্য পশম। এ ছাড়া সম্প্রতি কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহারেও হোম টেক্সটাইল উৎপাদন হচ্ছে দেশে।

বৈশ্বিক হোম টেক্সটাইলের প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা। মোটের ৬০ শতাংশ ব্যবহার হয় দুই মহাদেশের দেশগুলোতে। বাংলাদেশের হোম টেক্সটাইলের ৮০ শতাংশ যায় এ দুই বাজারে। বিশ্বখ্যাত ক্যারফোর, ওয়ালমার্ট, আইকিয়া, আলদি, এইচঅ্যান্ডএম, মরিস ফিলিপস, হ্যামার মতো বড় ব্র্যান্ড এখন বাংলাদেশের হোম টেক্সের বড় ক্রেতা। অন্যান্য খুচরা ক্রেতার সংখ্যাও কম নয় বলে জানিয়েছেন রফতানিকারকরা। এদিকে রফতানি বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারও বাড়ছে। বিশেষ করে আবাসন ব্যবসার উন্নয়নের সঙ্গে হোম টেক্সটাইল খাতেও নতুন করে চাহিদা তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। একটি ফ্ল্যাটে দরজা-জানালার পর্দা, একাধিক বিছানার চাদর, কিচেন আইটেম, ডাইনিং আইটেমসহ বিভিন্ন রকমের হোম টেক্সটাইল পণ্যের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এতে হোম টেক্সটাইলের অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় আকার নিয়েছে। হোম টেক্সটাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, এ বাজার আনুমানিক ১৫ হাজার কোটি টাকার। দেশের ২৪-২৫টি প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য উৎপাদন করে থাকে।

কৃষিতে মাইলফলক : চা, শাকসবজি, ফলমূল, মসলাসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি প্রথমবারের মতো শত কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ১০৪ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। গত বছর এ খাতের রফতানির পরিমাণ ছিল ৮৬ কোটি ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের দুই মাস বাকি থাকতেই গত বছরের চেয়ে ১৮ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে।

স্বরূপে ফিরছে চামড়া খাত : চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি বেশ কয়েক বছর পর শত কোটি ডলারের ঘরে ফিরেছে। পরিবেশ দূষণের কারণে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর এ খাতের রফতানি কমতে থাকে। গত দুই বছর রফতানি ছিল শতকোটি ডলারের নিচে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ১০১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। এ আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি।

সম্ভাবনাময় অন্য খাত : কয়েকটি সম্ভাবনাময় খাত রফতানিতে ভালো করছে। এদের মধ্যে অন্যতম এক সময়ের সোনালি আঁশখ্যাত পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি টানা দুই বছর পর গত অর্থবছর শতকোটি ডলারে পৌঁছায়। চলতি বছরও সেই ধারা বজায় থাকবে। কারণ, এখন পর্যন্ত পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি ৯৭ কোটি ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি