1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
শ্লীলতাহানি | Bastob Chitro24
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

শ্লীলতাহানি

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

থানায় জিডি, সংসদ কর্মকর্তা বললেন শাসন করেছি

জোর করে অনেকবার জড়িয়ে ধরেছেন, অশ্লীলতা করেছেন এমনকি শ্লীলতাহানিও করেছেন অধীনস্থ নারী সহকর্মীকে। অনুনয়, অনুরোধেও নিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে থামাতে পারেননি। চাকরি আর লোক লজ্জার ভয়ে দিনের পর দিন সহ্য করে গেছেন বসের নির্যাতন। সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই তো শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। করেছেন সাধারণ ডায়েরি। কিন্তু ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তার দাবি শ্লীলতাহানি নয় শাসন করেছি মাত্র। ঘটনাটি সংসদ সচিবালয়ের।

সরকারি কর্মচারী হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরির মতো অনেকটা বিরল ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গত ২০শে মার্চ রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ওই জিডিটি করেন সংসদ সচিবালয়ের কমিটি শাখা-৬ এর অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নাজমুন নাহার। যার নম্বর ১২৫২। ৫০ বছর বয়সী ওই নারী কর্মচারীর স্বামীও সংসদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা। জিডিতে অভিযোগ করা হয়েছে কমিটি অফিসার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এতে বলা হয়েছে, রফিকুল ইসলাম গত ৪/৫ মাস যাবৎ অশ্লীল ভাষা এবং অপ্রীতিকর কথাবার্তা বলে আসছে। আমি বার বার উনাকে জোড় হাত করে অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকতে বলেছি। কিন্তু উনি সবকিছু উপেক্ষা করে আমাকে অফিস চলাকালীন কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের নোংরা ছবি দেখিয়ে বলে-এগুলো দেখলে মনে প্রশান্তি আসে। এদিকে জিডির পর রফিকুল ইসলাম পা ধরে মাফ চান বলে দাবি করেন ওই নারী কর্মচারী। এরপর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিডি প্রত্যাহার করে নেন। এরপরই প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন রফিকুল ইসলাম। তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে দিয়ে নানা ধরনের হুমকিও দেন। পরে ওই নারী কর্মচারী বিষয়টি লিখিত আকারে অভিযোগ করেন সংসদ সচিবালয়ের সচিবের কাছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে নাজমুন নাহার মানবজমিনকে বলেন, একজন নারী হয়ে অপমান আর অপদস্থের সঙ্গে চাকরি করতে হচ্ছে। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে যে আচরণ পেয়েছি তা মানসিকভাবে আমাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। অফিসের দরজা বন্ধ করে আমাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। থানায় সাধারণ ডায়েরির পর আমার কলিগের সামনে পা ধরে ক্ষমা চান, কান্নাকাটি করেন। নিজের ভুল স্বীকার করেন। তার কান্নাকাটিতে জিডি প্রত্যাহার করি। এরপরই আবার তার চেহারা পাল্টে যায়। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। পরে বাধ্য হয়ে সচিব বরাবর অভিযোগ দাখিল করি। নাজমুন নাহার বলেন, এর আগেও তার অধীনে যেসব নারী কাজ করেছেন তাদের সঙ্গেও একই আচরণ করেছেন। কিন্তু কেউ অভিযোগ দেয়ার সাহস পাননি। মুখ বুঝে সহ্য করে গেছেন। শুনছি এখন নাকি তিনি হজ করতে যাবেন। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, আমি আসলে ওই নারী কর্মচারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করিনি। তাকে শাসন করার চেষ্টা করেছি মাত্র। কি ধরনের শাসন প্রশ্নে তিনি বলেন, অফিসে দেরি করে আসা কিংবা তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার জন্য কয়েকবার ধমক দিয়েছি। শুধু এই কারণে একজন নারী আপনার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করলো প্রশ্নে তিনি বলেন, ভাই যা হওয়ার হয়েছে। এখন আমি হজে যাচ্ছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদককে ফোন করেন উত্তরাঞ্চলের এক হুইপের পিএস। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের চাচাতো ভাই দাবি করেন। পরে সংসদ সচিবালয়ের আরেক কর্মকর্তাকে দিয়ে নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদককে টাকার অফার করেন রফিকুল ইসলাম। এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, ঘটনাটি আমি এখনো জানি না। সচিবের কাছ থেকে বিস্তারিত জানবো। এক্ষেত্রে দোষীকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ওই কর্মকর্তা হজ থেকে ফিরলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের ঘটনায় সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে এবং রফিকের দ্রুত বিচার দাবি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী বলেন-রফিকুল ইসলামের আচরণ এবং চরিত্র কোনোটাই ভালো নয়। পূর্বে যেসব মহিলা কর্মচারী তার সঙ্গে ডিউটি করেছেন তাদের অনেকের সঙ্গেই সে এ ধরনের অশোভন আচরণ করার চেষ্টা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি