1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন | Bastob Chitro24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর, অমানবিক পরিবেশে বসবাসের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগকর্তাদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারির পরও অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা অব্যাহত আছে। সম্প্রতি নিয়োগকর্তাদের উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশী কিছু কর্মী প্রায় তিন মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে পানি, বিদ্যুৎ ছাড়া মানবেতর জীবনযাপন করার খবর মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দ্য ভাইভ নামে একটি সংবাদমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, দেশটির তামান মেলাবতি নামক এলাকায় বাংলাদেশী কিছু শ্রমিক রয়েছেন যারা নির্মাণ খাতে কাজ করেন। তারা গত তিন মাস ধরে অত্যন্ত মানবেতর পরিবেশে জীবনযাপন করছেন। এমনকি সেখানে একটি রাস্তার পাশে ড্রেনের ওপর শুধুমাত্র ফাইবারের ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করতে হয়েছে। এখানে টয়লেট ও গোসলের জন্য কোনো নিরাপদ সুব্যবস্থা ছিল না। এখানে আধুনিক মালয়েশিয়ার কোনো সুবিধা তারা পাননি। ছিল না বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিদ্যুৎব্যবস্থা। ঐ শ্রমিকদের নিয়োগকর্তাকে বারবার তাদের সমস্যার কথা বলা হলেও বিভিন্ন অজুহাত তুলে কর্র্ণপাত করেনি। তবে ওই বাংলাদেশী শ্রমিকদের নাম ও তাদের নিয়োগকর্তার নাম ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি।
এ ঘটনায় তামান মেলাবতি এলাকার রেসিডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আজহারি আবদুল তাহারিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের নজরদারির মধ্যেও এই অমানবিক পরিবেশে শ্রমিকদেরকে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা কেমন করে মাসের পর মাস এই অমানবিক পরিবেশে রাখতে পারে? এটা নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। তিনি আরো বলেন, এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে তাই সরকারের উচিত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা। বাংলাদেশী শ্রমিকরা দ্য ভাইভকে জানিয়েছেন, তারা এখানে পাহাড়ি ঢাল মেরামতের কাজে নিয়োজিত, গত তিন মাস আগে তাদের নিয়োগকর্তা তাদের আগের নিরাপদ বাসস্থান থেকে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করে রাস্তার পাশে ড্রেনের ওপর ত্রিপল টানিয়ে থাকতে বলে। তিন মাস আগে যেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল সেখানেও তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করে আসছিল। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করার পর তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদের পর নতুন করে রাস্তার পাশে এ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে অস্বীকার করলে নিয়োগকর্তা তাদের আশ্বাস দেন যে তাদের জন্য শিগগিরই নতুন বাড়ি ভাড়া করা হচ্ছে। তারপর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ওই নিয়োগ কর্তা নানা অজুহাতে নতুন বাড়ি ভাড়া করার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। তারা বলেন, বিদেশী অসহায় সাধারণ শ্রমিক বিধায় নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।
কিছু দিন আগেও অভিবাসীদের অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করার বিষয়টি দেশটির সরকারের নজরে আসে। তখন বলা হয়েছিল শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে নিয়োগকর্তাদের। যদি এর বাত্যয় ঘটে তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জাতীয় অভিবাসন কর্মী আইন ১৯৯০ (অ্যাক্ট ৪৪৬) এর অধীনে ৫০ হাজার রিংগিত বা ১০ লাখ টাকা জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে অধিকাংশ নিয়োগকর্তা শ্রমিকদের কাছ থেকে কাজ আদায় করার পর কোথায় কি অবস্থায় শ্রমিকরা থাকে এর কোনো খবরাখবর রাখেন না। বিশেষ করে যারা কনস্ট্রাকশন, পামশিল্প, ক্লিনিং সেক্টর, বৃক্ষরোপণ সেক্টরে কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিক অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করছে। নিয়োগকর্তারা দেশটির আইন অনুযায়ী নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে না। নিয়োগকর্তাদের আবাসন গাফিলতিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নজিরও খুব একটা দেখা যায় না। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পৌঁছানোর আগে সরকারের সাথে আলোচনা করে কর্মীদের নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি