সিরিজ নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। ভারতকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল সামনে। মঞ্চটাও ছিল প্রস্তুত। তবে এমন ম্যাচে ব্যাটে-বলের ব্যর্থতায় ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি দশা’ বাংলাদেশের। নিস্প্রাণ বোলিংয়ের পর নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে ভারতের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল লিটনরা। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ করেছে লাল-সবুজ বাহিনী।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়া ৪১০ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ১৮২ রানে। টিম টাইগার্সের হার ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে। ওয়ানডে ইতিহাসে অন্যতম বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ড এটি।
দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার পর হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানোর ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইশান কিষাণের রেকর্ডরাঙা ডাবল সেঞ্চুরি এবং তিন বছর পর বিরাট কোহলির ওয়ানডে শতকে ভর করে একদিনের ম্যাচে নিজেদের ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে ভারত। ৮ উইকেট হারিয়ে ৪০৯ রানের পাহাড় গড়ে সফরকারীরা।
ভারতের দেয়া পাহাড়সম রান টপকাতে অসাধ্য সাধন করতে হতো বাংলাদেশকে। রান তাড়ায় শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি। প্রথম চার ওভারে দুই ওপেনার সংগ্রহ করেছিলেন ৩৩ রান। তবে এরপর ভারতীয় অধিনায়ক কৌশলে বদল এনেই সাফল্য পেলেন। পেসারদের সহজেই খেলছেন দেখেই হয়তো স্পিনার আনেন রাহুল। প্রথম বলেই মেলেই উইকেট।
অক্ষর প্যাটেলের বলে ক্যাচ দিয়ে ৭ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন এনামুল হক। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ বিজয় আজও হতাশ করলেন। সেই সঙ্গে দলে নিজের জায়গাটাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। এর আগে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১৪, দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি আউট হয়েছিলেন ১১ রানে। ক্রমাবনতির ধারায় এবার ৮ রানে আউট হলেন তিনি। বিজয়ের পর বেশিক্ষণ টিকলেন না লিটনও। বোলারদের ওপর চড়াও হতে গিয়ে মোহাম্মদ সিরাজের বলে কাটা পড়লেন। শার্দুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ২৯ বলে চারটি ও একটি ছক্কায় ২৯ রান করেন লিটন।
অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন যেন। অক্ষর প্যাটেলের বলে অফ স্টাম্পের বাইরে গিয়ে সুইপ করার মাশুল দিলেন। ১৩ বল খেলে ৭ রান করে আউট হয়ে গেলেন তিনি।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর পাশাপাশি রান তোলাতেও মন্থর গতি। চারশ ছাড়ানো রান তাড়ায় যে শুরু প্রয়োজন সেটা পায়নি বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের রান একশ পেরিয়েছিল ১৯তম ওভাবে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে রাখছিলেন সাকিব। সমর্থকদের আশা বাড়ছিল তাকে ঘিরে। তবে কুলদিপ যাদবের শিকার হয়ে ফিরতে হলো তাকেও। ৫০ বরে চারটি চারে ৪৩ রান করেন সাকিব।
আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে টেনে তুলেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বড় পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যাওয়া দলকে আজ আর টানতে পারলেন না । শার্দুল ঠাকুরের বলে এক্সট্রা কাভারে মোহাম্মদ সিরাজের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। সিরিজে আউট হলেন প্রথমবারের মতো। তার বিদায়ে সব আশাও শেষ হয়ে গিয়েছিল। হারের ব্যবধানটা কততে গিয়ে ঠেকে অপেক্ষা ছিল সেটির।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন শার্দুল ঠাকুর। এছাড়া দুটি করে উইকেট উমরান মালিক ও অক্ষর প্যাটেলের দখলে গেছে।