1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট | Bastob Chitro24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২২ মে, ২০২২

সিলেটে এখনো বেশির ভাগ রাস্তাঘাট পানির নিচে, সুনামগঞ্জে নতুন এলাকা প্লাবিত, দৌলতদিয়ায় ঝুঁকিতে তিন ঘাট সিরাজগঞ্জে বাঁধ উপচে প্লাবিত নতুন এলাকা

সিলেটে বানভাসি মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। গো-খাদ্যের জন্যও চরম বিপাকে পড়েছেন লোকজন। এখনো তলিয়ে আছে বেশির ভাগ রাস্তাঘাট। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি। সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি  উজানে উন্নতি হলেও ভাটিতে হচ্ছে অবনতি। পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় সচল চার ঘাটের মধ্যে তিনটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে যানবাহন। সিরাজগঞ্জে বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে নতুন এলাকা। নেত্রকোনায় পাহাড়ি ঢলের কারণে বাড়ছে সোমেশ্বরী নদীর পানি। পাবনায় স্লুইসগেটের ভাঙা দরজা দিয়ে বোরো প্রকল্পে ঢুকছে পানি। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।

সিলেট : সিলেট নগরীতে বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার পানির জন্য হাহাকার চলছে। সিটি করপোরেশনের শোধনাগার ও কয়েকটি পাম্প বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ট্যাংক ও ট্রলি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানি সরবরাহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় ভারী বর্ষণ বন্ধ হওয়ায় সিলেটের সব নদীর পানি কমছে।  তবে রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘর এখনো রয়েছে পানির নিচে। ফলে ঘরছাড়া মানুষ এখনো ফিরতে পারছেন না। অবস্থান করছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। সিলেট নগরীর বন্যাকবলিত এলাকা থেকেও পানি নামছে। তবে এখনো রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে আছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন- এ ধারা অব্যাহত থাকলে তিন-চারদিনের মধ্যে পানি পুরোপুরি নেমে যাবে। তবে পানি কমা শুরু হওয়ায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (পানি) আবদুস সোবহান বলেন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে ময়লা পানি প্রবেশ করায় সেটি চালু করা যাচ্ছে না। পাম্পগুলোও পানির নিচে। চারটি পাম্পই বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে সেগুলো দ্রুত সচল করা হবে। নগরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এলেও উপজেলাগুলো এখনো বিপর্যস্ত। সব উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত সম্ভব হয়নি।

 

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে উজানে বন্যার উন্নতি হলেও ভাটিতে ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার প্রধান নদী সুরমার সুনামগঞ্জ ও ছাতক পয়েন্টে কমেছে পানির উচ্চতা। ভাটির শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাই ও শাল্লা উপজেলার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। ছাতক, দোয়ারাবাজার, সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে ত্রাণের ব্যাপক চাহিদা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসি মানুষ। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান, বাদাম ও সবজির খেত। ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক পুকুরের মাছ। ছাতক-সিলেট, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ, ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের ডুবে যাওয়া অংশ থেকে পানি নামতে শুরু করলেও পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। সেসব সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য ১৬৫ মেট্রিক টন চাল, চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সেগুলো দুর্গত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। ছাতকে ১২,  দোয়ারাবাজারে ৬ ও সদর উপজেলায় ২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেগুলোতে ৩০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মাঝে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনী ত্রাণ ও পুনর্বাসের ব্যবস্থা করছে সরকার।

রাজবাড়ী : পদ্মা ও যমুনা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তের ৫ নম্বর ফেরিঘাট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন পার হচ্ছে। দৌলতদিয়া প্রান্তের সচল চার ঘাটের মধ্যে তিনটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। মাঝ মাঝে বন্ধ রাখতে হচ্ছে পাঁচ নম্বর ফেরিঘাট। এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, পদ্মায় বর্তমানে যে পরিমাণ পানি বেড়েছে, তা দেড় মাস পর বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল।

সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি বেড়ে প্রতিদিনই সিরাজগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় ২৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ফলে প্রতিদিন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তীব্র স্রোতে নদী-তীরবর্তী অঞ্চল কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীতে বালির বস্তা ফেলছে।

পাবনা : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় হঠাৎ বেড়েছে গুমানি নদীর পানি। পুঁইবিল স্লুইচ গেটের ভাঙা দরজা দিয়ে বোরো প্রকল্পে ঢুকে পড়েছে বেড়ে যাওয়া পানি। এতে পাকা ধান তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক।

নেত্রকোনা : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে সোমেশ্বরী নদীর পানি। ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন তীরবর্তী শিবগঞ্জ, কুল্লাগড়া, ভবানীপুরের কয়েকটি পরিবার। গেল বছর সোমেশ্বরীর পাড় ঘেঁষে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি