1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
বিদ্যুৎ নিয়ে অসন্তোষ | Bastob Chitro24
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন

বিদ্যুৎ নিয়ে অসন্তোষ

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৩ মে, ২০২২

বিদ্যুৎ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে গ্রাহকদের মধ্যে। আবাসিক গ্রাহক, ব্যবসায়ী, অফিস-বাণিজ্যিক গ্রাহকসহ সব পর্যায়ের গ্রাহকদের মধ্যেই এই অসন্তোষ। নিয়মিত বিদ্যুৎ পরিশোধ করেও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। গ্রাহক ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ। বর্তমান ২০২২ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট। আর গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২১ লাখ। এ একযুগে ১১ দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। রেন্টাল, কুইক রেন্টালে শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। অথচ এখনো স্বাভাবিক বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না ভোক্তারা। গ্রাম পর্যায়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রাজধানী ঢাকার আশপাশেও প্রতিদিন কয়েক দফায় বিদ্যুৎ চলে যায়। আর শিল্প মালিকদের অভিযোগ পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় মিল-কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, এতে বিনিয়োগে বিদেশিরা নিরুৎসাহী হচ্ছেন। অথচ এই অবস্থায় আবার বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বিইআরসির কারিগরি কমিটি। এ নিয়ে গত শনিবার এক সেমিনারে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নেতারা বলেছেন, এ অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে সরকারের জন্য আত্মঘাতী। কারণ বিদ্যুতের দাম বাড়লে সব ধরনের পণ্যে এর প্রভাব পড়বে। অবশ্য বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল জানিয়েছেন, সবকিছু বিবেচনা করে সবার জন্য সহনশীল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে, সেটিও দেখা হবে।

জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, দেশের সব মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং এটা একটা বড় সুখবর। বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা গড় ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি রাখতে হয়, কারণ দিনের গড় চাহিদা আর সর্বোচ্চ চাহিদার পার্থক্য বিস্তর। সারাদিনের গড় চাহিদা ৭-৮ হাজার হলেও সন্ধ্যায় এই চাহিদা পৌঁছে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াটে। আর গরমের সময় এই চাহিদা ১৪-১৫ হাজার মেগাওয়াটে গিয়ে দাঁড়াবে। ফলে ওই সময়ের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্যবস্থাপনা রাখতে না পারলে ওই সময় সবাইকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে না।

ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম শামসুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, ভর্তুকি প্রদান না করে এবং খরচ কমানোর যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে অন্যায়, অযৌক্তিক ও লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ক্যাবের প্রস্তাব বিবেচনা করলে দাম বাড়ানো লাগবে না। গ্রামে এখনো লোডশেডিং হচ্ছে। প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো হলেও বিদ্যুৎ খাতে পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। বসিয়ে বসিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ভাড়া দিতে হচ্ছে। বন্ধ না করে উচ্চব্যয়ের ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (কুইক রেন্টাল) মেয়াদ বারবার বাড়ানো হয়েছে। বেশি দক্ষতার কেন্দ্রের বদলে কম দক্ষতার কেন্দ্র চালানোয় উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি উৎস থেকে বাড়তি দামে বিদ্যুৎ কেনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। গত ১২ বছরে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম ১১বার বাড়ানো হয়েছে। এ সময় পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১১৮ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। বাকি ঘাটতি মেটাতে প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে এ হারে দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বিইআরসির কারিগরি কমিটি। পাইকারিতে বাড়লে বৃদ্ধি পাবে খুচরায়ও।

গত বুধবার কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে জানানো হয়, বিইআরসির কারিগরি কমিটি ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। এর আগে পিডিবি বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়াতে বিইআরসির কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে গণশুনানিতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ও সুপারিশ তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে। বিদ্যুতের দাম ৫৮% বৃদ্ধির সুপারিশ, তীব্র বিরোধিতা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই), ব্যবসায়ীদের প্রভাবশালী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং রফতানিমুখী পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতা ও প্রতিনিধিরা গণশুনানিতে উপস্থিত হয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে শিল্পকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে কী কী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা তুলে ধরেন।

পিডিবি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করায় গত অর্থবছরে (২০২০-২১) তাদের ১১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। উৎপাদন ব্যয়ের কমে বিদ্যুৎ বিক্রি করায় চলতি অর্থবছরে তাদের লোকসান হতে পারে ৪০ হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে এপ্রিল পর্যন্ত পিডিবি সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি পেয়েছে ১০ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। বিইআরসির কারিগরি কমিটি যে ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, যা ভর্তুকি ছাড়া। পিডিবি আরও বলছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। গত জুন থেকে ফার্নেস অয়েলে সরকার ঘোষিত আমদানি শুল্ক-কর কার্যকর হয়েছে। এতে খরচ বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। গত জুলাই থেকে কয়লার ওপর ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) আরোপ করা হয়েছে। কয়লার দামও বিশ্ববাজারে বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। লোকসানের বোঝা কমাতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো দরকার।

সরকারের সংস্থা পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্যসহ)। বিপরীতে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট (গত ১৬ এপ্রিল)। চুক্তি এমন যে, বেসরকারি খাতের বেশির ভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদন না করলেও ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) দিতে হয়। গত এক দশকে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ায়। অনুসন্ধান ও উৎপাদনে জোর না দিয়ে চড়া দামের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে। বাড়তি খরচের এ বোঝা চাপছে গ্রাহকের ওপর। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত মার্চে এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র আনতে না পারায় বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদের ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেয়াদ শেষেও চালু রাখতে হয়েছে। ৯২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এমন ১২টি স্বল্পমেয়াদি বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনো চালু আছে।

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিরোধিতা করে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, দেশের সাড়ে তিন কোটি ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণ করে না। বিদ্যুতের দক্ষ ব্যবহার, সেবার মান, জ্বালানি পরিচালনা, আন্তর্জাতিক মান ও কৌশল অনুসরণে পিডিবি ব্যর্থ। জ্বালানির ওপর আরোপিত করভার ভোক্তাসহ দেশের উৎপাদনশীল কাজের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা বিধ্বংসী ও আত্মঘাতী। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব কোনোভাবেই বিবেচনাযোগ্য নয়। বিদ্যুতের দাম বাড়লে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।

ক্যাবের বিকল্প প্রস্তাব : বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে পিডিবির ঘাটতি মোকাবিলার কিছু উপায় জানিয়েছে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। তারা হিসাব দিয়ে দেখিয়েছে, পাইকারি পর্যায়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি সমন্বয় করেও ৩ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রাখা সম্ভব। এর জন্য কয়েকটি খাতে ব্যয় সাশ্রয়ের পথ দেখানো হয়েছে, যা হলো উৎসে কর আরোপ না করা, তেলে শুল্ক-কর অব্যাহতি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া, কয়লার ভ্যাট প্রত্যাহার, বেসরকারি খাতের বদলে সরকারিভাবে তেল আমদানি করা, ‘অবৈধ’ভাবে বাড়ানো জ্বালানি তেলের দাম বাতিল করা, কুইক রেন্টাল থেকে ‘অবৈধ’ভাবে কেনা বিদ্যুতের মূল্য হিসাব না করা, অধিক দক্ষতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চালানো, সরাসরি গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া সব গ্রাহকের মূল্যহার অভিন্ন করা এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাইকারি মূল্যহার যৌক্তিক করা।

কুইক রেন্টাল চিত্র : বর্তমানে গ্যাসভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ২৪৫ মেগাওয়াট। বর্তমানে ১৬টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক ৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৫২ মেগাওয়াট এবং ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ৯টি উৎপাদন ক্ষমতা ৭৫৭ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় অতি দ্রুত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের তাৎক্ষণিক পরিকল্পনায় তিন বছর, ৫ বছর ও ১৬ বছর মেয়াদি ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা না গেলে খাতভিত্তিক উৎপাদন, দেশজ উৎপাদন ও রফতানি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতো। এতে সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য সূচক এবং কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য দূরীকরণ সংক্রান্ত খাতভিত্তিক সূচকে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারতো।

সরকারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু হলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেয়াদপূর্তিতে অবসরে যাওয়ার কথা বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হওয়ায় ভাড়াভিত্তিক কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে এক হাজার ১০৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে, যা ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অবসরে যাবে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত ৬টি রেন্টাল এবং ৬টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ২৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ১৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৩৯৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সব মিলে মেয়াদোত্তীর্ণ ১২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট ক্ষমতা ৮৩৩ মেগাওয়াট।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পর দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্রমান্বয়ে অবসর প্রদান করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এইএফওভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। তবে সিস্টেম ফ্রিকোয়েন্সি রক্ষা এবং মূল্য কম হওয়ায় কিছু কিছু গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ প্রয়োজন অনুযায়ী ‘ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তিনটি রেন্টাল ও দুটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গ্যাসভিত্তিক এবং এর উৎপাদন ক্ষমতা ২৪৫ মেগাওয়াট।

জানতে চাইলে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সংকটাপন্ন বিদ্যুৎ খাতের উত্তরণ ঘটেছে গত এক দশকে। তবে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সুশাসনের অভাব ব্যাপক। এ খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম, অপচয় দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত সম্মিলিতভাবে সোচ্চার থাকতে হবে। কমিশনের দায়িত্ব ছিল, ভোক্তা অধিকার রক্ষা করা। দুর্নীতির জন্য প্রকৃত দামের চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, দুর্নীতি, অপচয়, অদক্ষতা রাষ্ট্র দূরে করতে পারছে না। অথচ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সরকার ইনডেমনিটি আইন করে রেখেছে। এ আইন থাকা উচিত নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি