বর্ষণ ও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় বিভিন্নস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সুনামগঞ্জ : টানা ভারী বর্ষণ বন্ধের পর ঝলমলে রোদের দেখা পেয়ে অন্যরকম এক লড়াইয়ে নেমেছেন সুনামগঞ্জের হাওরের কৃষকরা। ব্যস্ততম সড়ক, মহাসড়ক, বাড়ি, অফিসের আঙিনা অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ইত্যাদি স্থানের শুকনা জায়গাগুলোতে তাদের কর্মযজ্ঞে মেতে ওঠার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার যতগুলো পাকা সড়ক রয়েছে, তার অর্ধেক এখন কিষান-কিষানিদের দখলে। দিনভর ধান, খড় শুকানো থেকে শুরু করে অপরিপক্ব ধান বাতাসে উড়িয়ে দেওয়া, বানের পানি থেকে কেটে নিয়ে আসা ধান মাড়াই করা- সবই হচ্ছে সড়ক, মহাসড়কে। তারা বলছেন, পানি কমলেও গৃহস্থালির এই কাজটুকু করার শুকনা জায়গা এখনো কাজের উপযুক্ত হয়নি। এদিকে ব্যস্ততম সড়ক দখল করে কৃষকদের এই জীবন-সংগ্রাম চালানোর বিষয় নিয়েও কোনো অভিযোগ নেই চালক, যাত্রী কিংবা পথচারীদের। বরং ধীরগতিতে গাড়ি চালিয়ে তাদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতাই প্রকাশ করে যাচ্ছেন তারা। গতকাল দুপুরে সুনামগঞ্জ-সাচনা সড়কে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের বড়ঘাট থেকে শুরু করে নিয়ামতপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও একপাশে, আবার কোথাও বা দুই পাশে ধান কিংবা খড় শুকাচ্ছেন কৃষকরা। সারা বছরের গো-খাদ্যের জোগান দিতে ভেজা খড় শুকাচ্ছেন কেউ কেউ। আবার সড়কের পাশের খরচার হাওরে পানি কমায় ভেসে ওঠা আধাপচা ধান কেটে নিয়ে এসে সড়কেই মজুদ করছেন কৃষকরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সরেজমিনে গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতলা ও জামারবালি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, নৌকা দিয়ে হাঁটু পানি থেকে বাদাম তুলছেন কৃষক ও কিষানিরা। গত দুই দিনে মেঘনার পানি পাঁচ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষিরা জানান, যে বাদাম এখন তোলা হচ্ছে তার অধিকাংশই অপরপিক্ব। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলায় এ বছর ২০০ হেক্টর জমিতে বাদাম আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে গোয়ালনগর ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার বিঘা বাদাম চাষ করা হয়েছিল। উপজেলায় বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার মণ। কিন্তু উজানের পানির কারণে হঠাৎ বন্যায় সে লক্ষ্যমাত্র এবার অর্জিত হবে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক বলেন, নাসিরনগরের কয়েকটি চরাঞ্চলে বাদাম চাষ করা হয়। তবে এ এলাকার চরাঞ্চলে আগে আলু চাষ করা হয়, তার পর চাষ হয় বাদাম। তাই নিচু এলাকা হওয়ায় পানিতে তলিয়ে যায়। প্রথমেই বাদাম চাষ করা হলে পানিতে তলিয়ে যেত না।