1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
টববে টমেটো চাষাবাদ পদ্ধতি। | Bastob Chitro24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ অপরাহ্ন

টববে টমেটো চাষাবাদ পদ্ধতি।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২

সম্পূর্ণ বিষমুক্ত উপায়ে বাড়ির টবে (Terrace farming) সহজেই টমেটো চাষ করা যায়। টবে টমেটো চাষ করতে প্রথমত টবের আকার সঠিক হওয়া দরকার। যত বড় টব হয়তো ততই ভালো তবে সর্বনিম্ন অন্তত ৫/৭ কেজি মাটি ধরে এমন টবেও আপনি টমেটো চাষ করতে পারবেন।

এছাড়া কিছু টমেটোর জাত রয়েছে যেগুলো আকারে বেশ বড় হয় । এসব জাত এর চাড়া বড় টব বা ড্রামে লাগানো প্রয়োজন। মাটি তৈরি(Soil): টবে টমেটো চাষের প্রথম ধাপ হল মাটি প্রস্তুতকরণ। এর জন্য ২ ভাগ মাটির সাথে ১ ভাগ গোবর সার এবং কিছু টিএসপি সার ভালভাবে মিশিয়ে ১০-১২ দিন খোলা জায়গায় রেখে দিন। টমেটোর জন্য ৮ ইঞ্চি টব হলে চলবে এছাড়া ২ কেজি আঠার প্যাকেট এবং ৩ লিটার ও ৫ লিটার এর তেলের বোতলও ব্যবহার করতে পারেন। এরকম প্রতিটি টবে ১টি করে চারা রোপন করতে পারেন, তবে বড় টব হলে প্রতি টবে একাধিক চারা রোপন করতে পারেন। টবে চারা রোপন করে শীতকাল হলে রোদে রাখতে পারেন আর গরমকাল হলে হালকা রোদে রেখে দিন।

বৃষ্টির দিনে গাছকে বৃষ্টিতে রাখবেন না। সেচ: টবে টমেটো চাষ এর ক্ষেত্রে জল সেচ দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। টমেটো গাছে প্রতিদিন পানি দিতে হবে । তবে কোনভাবেই অতিরিক্ত জল প্রয়োগ করা যাবে না । বেশি পানি দিলে টমেটো গাছে নানা ধরনের রোগ হয় , এছাড়া গাছের পাতা প্রতিদিন ভিজিয়ে পানি দেওয়া বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক জাতীয় রোগের জন্য দায়ী। বাসাবাড়ির প্রতিদিনের মাংস বা মাছ ধোয়া পানি গাছে সরাসরি দিয়ে দেবেন এতে গাছের অনেক উপকার হয়। মনে রাখতে হবে কোন কারণে যদি টমেটো গাছে পানির অভাব হয় তবে ফলন ভালো হবে না এবং ফল ছোট অবস্থাতেই ফল ঝরে যাবে। টমেটোর জাত বাছাই করা বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের টমেটো আছে।

তবে তাঁর মধ্যে তিনটি ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে আগাম জাতঃ বারি টমেটো ৪, বারি টমেটো ৫, রোমা ভিএফ, রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ ১, উন্নয়ন এফ ১, পুষারুবী, নিউ রূপালী এফ ১ ইত্যাদি। ভরা মৌসুমী জাতঃ মানিক, রতন, বারি টমেটো ৩, বারি টমেটো ৬, বারি টমেটো ৭, বারি টমেটো ৯, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি জাতকে বেছে নেয়া যেতে পারে। নাবি শীত মৌসুমী জাতঃ বাহার, রোমা ভিএফ, রাজা, সুরক্ষা ইত্যাদি জাত নাবি চাষের জন্য ভালএবং সারা বছর চাষের উপযোগি জাতঃ বারি টমেটো ৬(চৈতী)চাষ করা যায়। সার প্রয়োগ(Fertilizer): রোপণের সময় প্রয়োগকৃত সার এর বাইরে ও নিয়মিত জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে অপরদিকে রাসায়নিক সার প্রয়োগ ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয় । এছাড়া গাছের অবস্থা দেখে ইউরিয়া ও অন্যান্য সার গাছের গোড়ার ৬ ইঞ্চি দূরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। টবের গাছের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় তরল সার ব্যবহার করলে। তরল সার তৈরির জন্য ২০০ গ্ৰাম অথবা ৫০০ গ্ৰাম পরিমাণ শুকনো গোবর ২ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৩/৪ দিন রেখে দিতে হবে।

এরপর রাসায়নিক সার দিতে চাইলে , ঐ তৈরি করা তরল সার এর সাথে NPK বা মিশ্র সার এক চা চামচ পরিমাণ মিশিয়ে টবে প্রয়োগ করুন। প্রয়োগের সময় গাছের গোড়া থেকে অন্তত ৬-৮ ইঞ্চি দূরে তরল সার টি প্রয়োজন মত ঢেলে দিন । এই তরল সার প্রতি মাসে ২ বার প্রয়োগ করলে ফলন বেশ ভালো হবে। রোগবালাই ও দমন(Disease management system): টমেটো গাছের পাতায় ছত্রাক আক্রমণ করে। এ জন্য মেকোজেব, কার্বোন্ডিজম, মেটালিস্কিম ইত্যাদি গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। গাছের পাতা কুঁকড়ালে দিতে হবে এবামেকটিন গ্রুপের কীটনাশক। সাত দিন পর পর। কোসাইড প্রতি লিটার পানিতে ৩ গ্রাম মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে হবে। তাহলে গোড়া পচবে না। ছত্রাকনাশক কেবল স্প্রে নয়, গাছের মাটিতেও দেওয়া যায়। টমেটো গাছে সাদা মাটি ভাইরাস ছড়ায়। তাই রিপকড, ইমিটাপ কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

ভাইরাস আক্রান্ত হলে গাছ তুলে ফেলে দেওয়া উত্তম। টমেটোর ওপরের দিকে পচে যায় ছত্রাকের কারণে। নিচের দিকে পচে যায় ক্যালসিয়ামের অভাবে। ক্যালসিয়ামের জন্য এক লিটার পানিতে খাবার চুন ৩০ গ্রাম মিশিয়ে তার ওপরের পানির সঙ্গে আরও পানি মিশিয়ে মাটিতে দিতে হবে। ৯০-১২০ দিনের মধ্যে টমেটো ঘরে তোলা যায়। একটি সুস্থ, সবল গাছে প্রচুর টমেটো হয়। তাই সামান্য যত্নে অসংখ্য টমেটো পাওয়া সম্ভব। ফল সংগ্রহ টমেটোর ফল পাকার পর লাল রঙ ধারন করে সেই সময়ে ফল সংরক্ষন করতে হয়। এছাড়া ফলের নিচে ফুল ঝরে যাওয়ার পর যে দাগ থাকে ঐ স্থান থেকে লালচে ভাব শুরু হলেই ফল সংগ্রহ করা যাবে। এতে ফল অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি