যশোর থেকে ভাড়া করে আনা পিকআপের চালক মিনারুল ইসলাম(৪৫)কে শ^াসরোধে হত্যা করে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে লাশ ফেলে দেয়ার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ভেড়ামারা থানায় অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় জড়িত সন্দেহে আরশাদুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগশন পিবিআই কুষ্টিয়া। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার পিবিআই প্রধান পুলিশ সুপার শহীদ আবু সরোয়ার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এসময় সেখানে জেলার কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং মামলার বাদি নিহত মিনারুলের স্ত্রী রাশিদা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা এবং পিবিআইয়ের কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় নিহতের স্ত্রী রাশিদা খাতুনকে স্বামী মিনারুল হত্যার আসামীদের উপর চরম ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায়। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আড়ষ্ট গলায় বলেন, “আমি সমিতি থেকে কিস্তিতে ৪লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ওই পিকআপটি কিনে দিয়েছি, নিজে খেয়ে না খেয়ে গাড়ির ভাড়া থেকে যে টাকা আসত তার সবটাই ঋনের কিস্তি দিতে শেষ হয়ে যায়। ধর্য্য ধরে পেটে পাথর বেঁধে অপেক্ষায় ছিলাম আর বছর খানেক পার করতে পারলেই কিস্তির টাকা শোধ হলেই হয় কষ্ট একটু কমে যাবে। ওরা আমার স্বামীকে খুন করে পিকআপটাও বেহাত হয়ে গেলো, আগামী সপ্তাহ থেকেই হয়ত সমিতির লোকজন এসে কিস্তির টাকা না পেয়ে তারা মামলা করে দিবে। শেষ পর্যন্ত এই ঋন্রে টাকার জন্য আমার কপালে জেলের ভাত খেতে হবে”। এভাবেই বলছিলেন নিহত পিকআপ মালিক ও চালক মিনারুলের স্ত্রী। তার কোলে ছোট্ট ৫ বছর বয়সী আবির কোন কিছু না বুঝেই ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে মায়ের প্রলাপ দেখছিল। রাশিদা তার স্বামী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। উল্লেখ্য গত ১০আগষ্ট দুপুরে কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের (রেলসেতু) নিকটস্থ পদ্মা নদীতে ভাসমান হাত পা বাধা, মুখে স্কচটেপ ও গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি সনাক্ত হয় যশোর জেলার নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়ার বাসিন্দা আয়ুব আলীর ছেলে পিকআপ চালক মিনারুল ইসলামের। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুষ্ট্য়িার ভেড়ামারা উপজেলার মওলা হাবাস্পুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামানের ছেলে আরশাদুল ইসলাম(৩১), একই গ্রামের ফেরদৌস আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম(২২) এবং নতুনহাট গ্রামের আব্দুল এর ছেলে তুফান (২২)। গ্রেফতার আসামীরা পরিকল্পিত ভাবে ঢাকা মেট্ট:– ন- ১৮-১১৮৫নং পিকআপ ছিনতাই করার জন্যই পিকআপ চালক মিনারুল ইসলামকে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে এমন কথা নিশ্চিত করেছেন পিবিআই পুলিশ সুপার শহীদ আবু সরোয়ার।